বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাঊল করিম বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী রাজনীতির পাশাপাশি গণমানুষের কল্যাণে ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সুখ-দুঃখে সব পাশে থাকার চেষ্টা করছে। আমাদের প্রত্যাশা অনেক হলেও সাধ্য খুবই সীমিত। তবুও আমরা সীমিত সামর্থ নিয়ে ঈদের আনন্দকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাথে ভাগাভাগি করতে ঈদ সামগ্রী নিয়ে আপনাদের সাথে হাজির হয়েছি। গণমানুষের জন্য জামায়াতের এই কল্যাণকামীতা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে-ইনশা আল্লাহ। তিনি সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সমাজের সক্ষম ও বিত্তবান মানুষের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের রমনা পশ্চিম থানা আয়োজিত সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মু. আতাউর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন থানা সেক্রেটারি ইউসুফ আলী মোল্লা, জামায়াত নেতা আখতার হোসেন ও আব্দুল ওয়াদুদ সরদার প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, দেশ ও জাতি এক মহাক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই বিরাজনীতিকরণের পথ বেছে নিয়েছে। তারা জনগণের কল্যাণে কাজ করার পরিবর্তে দেশের মানুষের ওপর রমজান মাসেও জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। সরকার বিরোধী দলনির্মূলের নীলনকশার অংশ হিসেবেই খুন, গুম, অপহরণ, গুপ্তহত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড চালিয়ে দেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাব মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই ঘরছাড়া করা হয়েছে। বিনা অপরাধে গ্রেফতার করে কথিত রিমান্ডের নামে নির্মম ও নিষ্ঠুর নির্যাতন চালিয়ে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ করে রাখা হচ্ছে। ৮২ বছর বয়সী আমীরে জামায়াত মকবুল আহমদ ও ৩ বারের সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এই জুলুমবাজ সরকার রেহাই দেয়নি। এমতাবস্থায় বিরোধী দলগুলোর পক্ষে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করাও সম্ভব হচ্ছে না। সরকার ইফতার মাহফিলের মত ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও বাধা দিচ্ছে। এমনি এক বৈরি পরিস্থিতির মধ্যেই আমরা সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা চিন্তা করে ঈদ সামগ্রী নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। তিনি ঈদ সামগ্রী গ্রহণের জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, মূলত দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠিত না থাকায় মানুষের সমস্যা বেড়েছে। যারা গণমানুষের কল্যাণে ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন সরকার তাদেরকে বিশেষভাবে টার্গেট করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সরকার পরিকল্পিতভাবেই এসব জাতীয় নেতাদের হত্যা করে তাদের যোগ্যতর খেদমত থেকে দেশ ও জাতিকে বঞ্চিত করেছে। তারা জীবিত থাকলে অধিক পরিমাণ ঈদ সামগ্রী নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হতেন পারতেন। মূলত সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই বা তারা জনগণের কল্যাণে কাজও করে না বরং যারা জনগণের জন্য নিবেদিত প্রাণ সরকার তাদেরকেই নির্মূল ও উৎখাতের জন্য দলীয় ও রাষ্ট্রীয় শক্তির অপব্যবহার করছে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই এই গণবিরোধী সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের অপশাসন-দুঃশাসন সকল সময়ের সীমা অতিক্রম করেছে। কথিত মাদকবিরোধী অভিযানের নামে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। সরকার ২০১৮/১৯ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট ঘোষণা করেছে তা পুরোপুরি উচ্চাভিলাষী। মূলত এই বাজেট কোনভাবেই বাস্তবায়ন যোগ্য নয়। ঘোষিত বাজেটে অনেক বড় বড় কথা বলা হলেও প্রায় দেড়লক্ষ কোটি টাকা ঘাটতি দেখানো হয়েছে। এই ঘাতটি কিভাবে পূরুণ হবে তার কোন সুষ্পষ্ট দিক নির্দেশনা বাজেটে নেই। সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের গালগল্প শোনালেও ঘোষিত ঘাটতির বাজেটে তা অসার প্রমাণ হয়েছে। মূলত সরকার জনগণকে ধোকা দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য এমন উচ্চাভিলাষী বাজেট জাতির ঘাড়ে চেপে দিয়েছে। তিনি ঘোষিত বাজেট প্রত্যাহার করে নতুন করে গণমুখী বাজেট প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।