ব্যর্থ, জুলুমবাজ ও নৈশ্য ভোটের সরকারের প্রতি গণঅনাস্থা জানাতে দলমত নির্বিশেষে সকল স্তরের নগরবাসীকে স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণভাবে ১ আগস্টের বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে জামায়াত আহুত সমাবেশে দলে দলে যোগদান করে সফল ও স্বার্থক করার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসা।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার পূনঃপ্রতিষ্ঠা, আমীরে জামায়াত ডা.শফিকুর রহমান ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মী ও ওলামায়ে কেরামের নিঃশর্ত মুক্তি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে এক সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান এবং ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন, মাওলানা মুহিবুল্লাহ, মু. আতাউর রহমান সরকার ও নাসির উদ্দীন, শিবির নেতা সালাহ উদ্দীন, আব্দুর রহিম ও আসাদুজ্জামান প্রমূখ।
আব্দুর রহমান মূসা বলেন, আওয়ামী সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই দেশ ও জাতির প্রতি কোন দায়বদ্ধতা নেই। তারা বিগত প্রায় ১৫ বছরে জনগণের কল্যাণে কাজ না করে নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করেছে। সরকার সংশ্লিষ্টদের বৃহত একটি অংশ দেশ থেকে নির্বিবাদে অর্থপাচার করে বিদেশে অর্থের পাহাড় বানিয়েছে। আর তাদের এই অপকর্মকে নির্বিঘœ করার জন্য এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই জামায়াতের শীর্ষনেতাদের একের পর এক হত্যা করে দেশের পবিত্র জমিনকে রক্তাক্ত ও কলঙ্কিত করা হয়েছে। সে ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বিশ^ ইসলামী আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান এবং ঢাকা মহানগরী উত্তর আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন সহ প্রায় সকল শীর্ষনেতাদের কারা অন্তরীণ করে জুলুম-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তিনি সরকারকে নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান ও মহানগরী আমীর সেলিম উদ্দিন সহ শীর্ষনেতাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
তিনি বলেন, দেশের মূল্য পরিস্থিতি এখন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সরকার নিয়ন্ত্রিত বাজার সিন্ডিকেটের কারণেই দেশে মূল্যস্ফীতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ফলে দেশে অন্যায়-অনাচার, অপরাধ প্রবণতা ও পাপাচারের মহোৎসব চলছে। এসব বিষয়ে দেশের বরেণ্য আলেম-উলামা সোচ্চার ছিলেন বলেই তাদেরকে জালিমের জিন্দানখানায় সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আটক রাখা হয়েছে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী নায়েবে নবীদের অসম্মান করে কোন সরকারের শেষ রক্ষা হয়নি; আর কারো হবেও না। তিনি জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি জুলুম-নির্যাতন বন্ধ করে অবিলম্বে সম্মানে মুক্তির দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, মূলত, আওয়ামী লীগ হচ্ছে গণতন্ত্র বিরোধী শক্তি। তারা যতবার ক্ষমতায় এসেছে তারা ততবারই জনগণের ভাত ও ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় তারা অত্যন্ত সুকৌশলে ও বিতর্কিত পন্থায় সংবিধান সংশোধন করে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করে রাষ্ট্রীয় সংবিধানকে দলীয় ইস্তেহারে পরিণত করেছে। তারা সে সংবিধানের দোহাই দিয়ে নিজেদের অধীনে নির্বাচন করে আবারো অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার দিবাস্বপ্নে বিভোর। কিন্তু সচেতন জনতা তাদের সে স্বপ্ন বিলাস কখনোই সফল হতে দেবে না। তিনি কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১ আগস্টের বায়তুল মোকাররামের উত্তর গেইটের সমাবেশ করার আহবান জানান। অন্যথায় জাতিকে ফ্যাসীবাদ মুক্ত করা যাবে না।