বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ বিনিয়োগে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিটে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয় গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর। উৎপাদন শুরুর সাত মাসের মধ্যে কেন্দ্রটি পাঁচবার বন্ধ রাখতে হয়েছে। এভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ঘন ঘন বন্ধ ও চালু করতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালু করার পর জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।
ডলার সংকটে কয়লা আমদানি জটিলতায় উৎপাদন শুরুর ২৭ দিনের মাথায় গত ১৪ জানুয়ারি প্রথম উৎপাদন বন্ধ হয়। কয়লা সরবরাহ স্বাভাবিক হলে এক মাসের মাথায় ফের কেন্দ্রটি চালু করা হয়। একই সংকটে গত ১৫ এপ্রিল কেন্দ্রটি আবার বন্ধ করা হয়। তিন দিনের ব্যবধানে পুনরায় চালু করা হলে আবারও বন্ধ হয় ২৩ এপ্রিল।
এরপর কারিগরি ত্রুটির কারণে গত ৩০ জুন আবার উৎপাদন বন্ধ হয়। ত্রুটি সারিয়ে ১০ জুলাই শুরু হয় উৎপাদন। ফের কারিগরি ত্রুটির কারণে গত ১৬ জুলাই থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালু রাখতে দৈনিক প্রয়োজন পাঁচ হাজার মেট্রিক টন কয়লা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি একবার বন্ধের পর চালু করতে এক-দেড় দিন সময় লাগে। প্রতিবার চালু করতে প্রয়োজন হয় এক লাখ লিটার জ্বালানি তেল, যার বাজারমূল্য কোটি টাকার বেশি। চালুর পর শুরু হয় কয়লার ব্যবহার। এভাবে ঘন ঘন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ ও চালুর ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইদ একরাম উল্লা গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কেন্দ্রটির ওই ইউনিট প্রতিবার চালু করতে আমাদের ১০০ কিলোলিটার (এক লাখ লিটার) জ্বালানি তেলের প্রয়োজন হয়।
কখনো কখনো এর চেয়ে বেশিও প্রয়োজন হয়। এবার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির টারবাইনে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় বন্ধ করতে হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে মেরামতকাজ শেষ করে পুনরায় কেন্দ্রটি চালু করা হবে।’
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘন ঘন অন-অফ (চালু-বন্ধ) করলে অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়। তাই এসব বড় কেন্দ্র সার্বক্ষণিক চালু রাখা প্রয়োজন।
https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2023/07/20/1300463