বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কর্তৃক পরিচালিত সাম্প্রতিক শিশুশ্রম জরিপ অনুযায়ী, গত ১০ বছরে দেশে শিশু শ্রমিক বেড়েছে ৮০ হাজার। ২০১৩ সালে দেশে শিশুর সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ। যা ২০২২ সাল শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৮০ হাজার। বুধবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত ন্যাশনাল চাইল্ড লেভার সার্ভে ২০২২ জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। এতে সভাপতিত্ব করেন বিবিএস’র মহাপরিচালক ড. মতিয়ার রহমান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে এখন শ্রমজীবী শিশুর সংখ্যা ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৭। যাদের বয়স ৫ থেকে ১৭ বছর। এ সংখ্যা ২০১৩ সালে ছিল ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯ জন। ১০ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৮৬ হাজার ৫৫৮ জন। অন্যদিকে শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত আছে ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ৯৭ জন।
২০১৩ সালের জরিপে ১৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮৯৪ জন। এ ক্ষেত্রে শিশুশ্রম বেড়েছে ৭৭ হাজার ২০৩ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রমিকে নিয়োজিত আছে ১০ লাখ ৬৮ হাজার ২১২ জন। ১০ বছর আগের জরিপে এ সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৮০ হাজার ১৯৫ জন। এ ক্ষেত্রে শিশু শ্রমিক কমেছে ২ লাখ ১১ হাজার ৯৮৩ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু শ্রম
জরিপ ২০২২ ফলাফলে দেখা যায় ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা হলো ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৬৪ হাজার ৫ জন বা ৩৯.৯৬ মিলিয়ন। এদের মধ্যে শ্রমজীবী শিশুর সংখ্যা ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৭ জন। শিশু শ্রমে নিযুক্ত শিশুর সংখ্যা ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ৯৭ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে নিযুক্ত রয়েছে এ রকম শিশুর সংখ্যা এক লাখ ৬৮ হাজার ২১২ জন।
যেখানে ২০১৩ সালের শিশুশ্রম জরিপে দেখা গেছে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৯৬ লাখ ৫২ হাজার ৩৮৪ জন। তাদের মধ্যে যথাক্রমে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯ জন শ্রমজীবী শিশু। শিশুশ্রমে নিযুক্ত শিশুর সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮৯৪ জন। ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে নিযুক্ত শিশুর সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৮০ হাজার ১৯৫ জন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৩ এবং ২০২২-এর ফলাফলের তুলনা করলে দেখা যায় ২০১৩ সালের তুলনায় ২০২২ সালে শ্রমজীবী শিশু এবং শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশুদের সংখ্যা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১০ বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় এ বৃদ্ধি খুবই অল্প। তবে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশুদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ-২০২২ অনুযায়ী ২ কোটি ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৭৭ জন হলো পুরুষ শিশু এবং বাকি এক কোটি ৯২ লাখ ৬৫ হাজার ৩৭৫ জন হলো মহিলা শিশু। কর্মজীবী শিশুর সংখ্যা ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৭ জন। যার মধ্যে ২৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪ জন পুরুষ শিশু এবং ৮ লাখ ২ হাজার ৮৮৩ জন নারী শিশু রয়েছে। শিশুশ্রমে নিয়োজিত ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ৯৭ জন। শিশুর মধ্যে পুরুষ শিশুর সংখ্যা ১৩ লাখ ৭৪ হাজার ১৫৪ জন এবং মহিলা শিশুর সংখ্যা ৪ লাখ ১ হাজার ৯৪৩ জন। একইভাবে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে ১০ লাখ ৬৮ হাজার ২১২ জন। শিশুর মধ্যে পুরুষ শিশুর সংখ্যা ৮ লাখ ৯৫ হাজার ১৯৫ জন এবং নারী শিশুর সংখ্যা এক লাখ ৭৩ হাজার ১৭ জন।
৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে গ্রামাঞ্চলে ৩ কোটি ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৫২ জন। শহরাঞ্চলে ৯৬ লাখ ১৪ হাজার ৯৫৩ জন শিশু রয়েছে। গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে কর্মরত শিশুদের সংখ্যা ২৭ লাখ ২৫ হাজার ৪০০ জন এবং ৮ লাখ ১১ হাজার ৫২৭ জন। একইভাবে গ্রামীণ এলাকায় শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪৬৪ জন। শহরাঞ্চলে ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৬৩৬ জন। গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে জড়িত শিশু রয়েছে যথাক্রমে ৮ লাখ ৩২ হাজার ৬৯৩ জন এবং ২ লাখ ৩৫ হাজার ৫১৯ জন।
অর্থনৈতিক খাতগুলো বিবেচনা করে দেখা যায়, ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী মোট শিশুদের মধ্যে ১০ লাখ ৭৯ হাজার ৫৫৯ জন শিশু কৃষিতে কাজ করে। ১১ লাখ ৯১ হাজার ৮০৬ জন শিশু শিল্প খাতে কাজ করে। ১২ লাখ ৭০ হাজার ৪৩১ জন শিশু সেবা খাতে নিয়োজিত আছে।