লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুতে রেকর্ড হচ্ছে দেশে। ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ২৩৯ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অর্থাৎ প্রায় মিনিটে মিনিটে ডেঙ্গু রোগী আসছেন হাসপাতালে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২৪৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। জুলাই মাসের ১৩ দিনে ৪৬ জনের প্রাণহানি এবং হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৯ হাজার ৪০৪ জনে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৩ জনে। হাসপাতালে এবার ভর্তি রোগী ছাড়িয়েছে ১৭ হাজার।
সরকারি সব হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি সেগুলোতে পৃথক ডেঙ্গু কর্নার চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড ওয়ার্ড চালু করেছে। মহাখালীর ৮০০ শয্যাবিশিষ্ট ডিএনসিসি হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
গতকাল সারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১ হাজার ২৩৯ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৫৬ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪৮৩ জন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন ১ হাজার ২৩৯ জনসহ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৯ জনে। ঢাকার ৫৩টি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২ হাজার ৭০৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৩৬১ জন। চলতি বছরের এ পর্যন্ত ১৭ হাজার ৩৮২ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩ হাজার ২২০ জন।
অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ১৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৩ জন, মার্চে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১১ জন এবং এপ্রিলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪৩ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫৬ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন। জুলাই মাসে শনাক্ত ৯ হাজার ৪০৪ জন এবং মারা গেছেন ৪৬ জন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি হবে। কারণ অনেক ডেঙ্গু রোগী বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন, তাদের হিসাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে নেই।