বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, ঈদ মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধের অন্যতম নিদর্শন। ঈদ মুসলিম উম্মাহর মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করে। তাই ঈদের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে। তিনি ঈদের শিক্ষা রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলন ঘটিয়ে গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি আজ স্থানীয় একটি অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির লক্ষ্মীপুর শহর শাখা আয়োজিত এক ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। শহর সভাপতি ফুয়াদ হাসানের সভাপতিত্বে ও অফিস সম্মাদক শাহরিয়ার রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জেলা জামায়াতের আমীর মাষ্টার রুহুল আমীন ভূঁইয়া। উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মফিজুল ইসলাম, ভাইস-চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাওলানা নাসির উদ্দীন মাহমুদ, শিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি সরদার সৈয়দ আহমদ, সাবেক শহর সভাপতি ফয়েজ আহমদ ও সাবেক জেলা সেক্রেটারি মমিন উল্লাহ পাটোয়ারি প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, আত্মগঠন ও আত্মশুদ্ধির মাস পবিত্র মাহে রমজান এ বছরের মত বিদায় নিয়েছে। কিন্তু মাহে রমজানের শিক্ষা ও মর্যাদাকে আমরা কতখানি কাজে লাগিয়েছি তার হিসাব-নিকাশ মেলানোর সময় এসেছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, সেই ব্যক্তি ধবংস হোক যে মাহে রমজান পেল অথচ সে নিজের গোনাহ মাফ করে নিতে পারলো না। রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, সে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমান এবং ইহতিসাবের সাথে সিয়াম ও কিয়াম পালন করে আল্লাহ তার পূর্বের সকল গোনাহ মার্জনা করে দেন। তাই আমাদেরকে ভেবে দেখতে হবে আমরা মাহে রমজানে সিয়াম-কিয়াস যথাযথভাবে পালন করতে পেরেছি কি না ? তিনি মাহে মাহে রমজানের মহিমাকে কাজে লাগিয়ে আর্ত-মানবতার সেবায় আত্মনিয়োগ করতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, প্রতি বছর ঈদ উৎসব আসে অনাবিল আনন্দ ও খুশীর বারতা নিয়ে। কিন্তু দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না থাকায় ঈদের প্রকৃত আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের মানুষ। মূলত স্বৈরাচারি ও ফ্যাসীবাদী শাসন জাতির ঘাড়ে চেয়ে বসেছে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলেও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দুষ্টের লালন করা হচ্ছে। ফলে দেশে জুলুম-নির্যাতন, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, গুপ্তহত্যা ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বেড়েই চলেছে। রাষ্ট্রের সকল বিভাগ দলীয়করণ করায় সাধারণ মানুষ আইনের আশ্রয় গ্রহণ করে কোন প্রতিকার তো পাচ্ছেনই না বরং নানাবিধ হয়রানী ও রাষ্ট্রীয় নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। এভাবে কোন গণতান্ত্রিক ও সভ্য সমাজ চলতে পারে না। তাই জাতীয় জীবনে ঈদকে অর্থবহ করতে হলে এই জুলুমবাজ ও ফ্যাসীবাদী সরকারের পতনের কোন বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করতে পারেনি। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন সকল সময়ের চেয়ে খারাপ পর্যায়ে। দ্রব্যমূল্যে উর্দ্ধগতির কারণে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সরকার ১০ টাকায় কেজিতে চাল দেয়ার কথা বললেও মোটা চালের মূল্যই এখন ৬০ টাকার উর্দ্ধে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে নিম্নবিত্তের করের বোঝা চাপানো হয়েছে। এই বাজেট পাশ হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন বহুলাংশেই দুর্বিসহ হয়ে উঠবে। মূলত নির্বচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্যই সরকার বাস্তবতাবিবর্জিত বাজেট ঘোষণা করেছে। তিনি সরকারের উচ্চাভিলাষী বাজেটের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহবান জানান।