আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের পদ্ধতি মেনে রিজার্ভের নতুন হিসাব প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন হিসাবে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৩৫৬ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার ডলার। গতকাল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ হিসাব প্রকাশ করে। একই সঙ্গে নিজেদের হিসাবও দেখিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অন্যদিকে নিজস্ব পদ্ধতিতে হিসাব করা গ্রস রিজার্ভ এর তথ্যর কথাও জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফ নির্দেশিত পদ্ধতিতে রিজার্ভ গণনায় সব বৈদেশিক দায় ও ঋণ এবং অর্থ অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করলে তা মূল রিজার্ভ থেকে বাদ যায়। রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ বিমান ও শ্রীলঙ্কাকে কিছু অর্থ ঋণ দেওয়া হয়েছে। আবার সরকার রিজার্ভের অর্থে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলসহ তিনটি তহবিল গঠন করে পরিচালনা করছে বৈদেশিক মুদ্রায়। এরপরও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের গ্রস হিসাবই এতদিন দিয়ে আসছিল। কিন্তু ডলার সংকটে পড়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ পেতে তাদের কয়েকটি শর্ত মানতে হচ্ছে।
আইএমএফ রিজার্ভের হিসাবে বিপিএম৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) পদ্ধতি অনুসরণের পক্ষপাতি। বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুন মাসে জানিয়েছিল, নিজস্ব ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করলেও বিপিএম৬ পদ্ধতিতে হিসাব করা রিজার্ভের তথ্য জানাবে না।
ওই ঘোষণা দিলেও রিজার্ভের প্রকৃত হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংক এমন সময়ে প্রকাশ করল, যখন আগামী অক্টোবরে ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড় করার আগে অর্থনৈতিক সংস্কারের অগ্রগতি দেখতে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে অবস্থান করে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে চলছে।
বিপিএম৬ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবে ব্যবধান হচ্ছে ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ আইএমএফ স্বীকৃত হিসাবের চেয়ে এ পরিমাণ ডলার রিজার্ভে বেশি দেখাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিপিএম৬ হিসাবে থাকা বর্তমান রিজার্ভ দিয়েও সাড়ে ৪ মাসের আমদানি দায় মেটানো যাবে। যেখানে ৩ মাসের আমদানি দায় পরিশোধের মতো রিজার্ভ থাকাকেই যথেষ্ট মনে করে আইএমএফ। বাংলাদেশের রিজার্ভ ২০২১ সালে ৪৮ বিলিয়ন ডলারও ছাড়িয়েছিল। তবে বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক চাপে খরচ বেড়ে গিয়ে তা ক্ষয় হতে হতে এতটা নেমে এসেছে।