বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, ঈদ মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় জমায়েত এবং আনন্দঘন উৎসব। কিন্তু সরকারের দায়িত্বহীনতা ও হঠকারিতার কারণেই এবারের ঈদ আমাদের জন্য পুরোপুরি উৎসবমুখর হয়ে ওঠেনি। তাই ঈদকে অর্থবহ করে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ ও জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। তিনি সরকারের জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলায় ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের রমনা পূর্ব থানা আয়োজিত ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর এ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি খন্দকার রুহুল আমীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমান, মাওলানা জাহাঙ্গীর হোসাইন, ডা. আবুল হাসেম মুন্সী ও তবিবুর রহমান টিপু প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, দীর্ঘ একমাস সিয়াম ও কিয়াম সাধনার পর আমরা ঈদ সম্মিলনে মিলিত হলাম। কিন্তু নির্যাতিত, নিপীড়িত, অধিকার বঞ্চিত ও স্বজনহারা মানুষে আকুতি ও আহাজারিতে ঈদের আনন্দ অনেকটাই ম্লান। দেশ ও জাতি যখন ঈদের আনন্দে উদ্বেলিত হওয়ার কথা তখন সারাদেশে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর চলছে জুলুম-নির্যাতন। এমনকি ইফতার মাহফিলের মত ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও তারা ন্যাক্কারজনকভাবে বাধা প্রধান করেছে। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাদের জিঘাংসা ও প্রতিহিংসা থেকে রেহাই পাননি বয়োবৃদ্ধ আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ এবং তিন বারের সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তারা উভয়েই বিভিন্ন শারিরীক সমস্যায় ভুগলেও সরকার প্রতিহিংসাবশত তাদেরকে চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছে। তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ সহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় গণরোষের মুখে সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই গণনিগ্রহের পথ বেছে নিয়েছে। নির্বিবাদে চলছে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ ও গুপ্তহত্যা। কথিত এনকাউন্টারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড। মূলত সরকার কথিত মাদকবিরোধী অভিযানের নামে গোটা দেশকেই মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে নির্বিবাদে মানুষ হত্যার লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে বিজয় নিশ্চিত করতেই সারাদেশেই ক্রাকডাউন অব্যাহত আছে। সে ধারাবাহিকতায় গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতিকে নির্বিঘœ করতেই বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বিচারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সরকারের সে ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে রাজশাহী মহানগরীর সাবেক শিবির সভাপতি মঞ্জুর রহমান মনিরকে গ্রেফতার করে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। মুলত সরকার ক্ষমতা রক্ষার জন্য দেশের মানুষে সাথে উম্মাদের মত আচরণ করছে। তাই এই ব্যর্থ ও জুলুমবাজ সরকারকে যত তাড়াতাড়ি ক্ষমতা থেকে বিদায় করা যায় ততই দেশ ও কল্যাণ। তিনি সরকার পতনের আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।