আগামী বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে চলতি বছরের হজ্বের ফ্লাইট। হাতে আছে মাত্র তিন দিন। অথচ এখনো সৌদী যেতে পারেননি ২৫ হাজার ৬৩৯ জন হজ¦যাত্রী। এর মধ্যে ৬ হাজার ৫০০ জন যাত্রীর হজ্ব যাত্রা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। কারণ শিডিউলড ফ্লাইটে তাদের যাত্রা নিশ্চিত করা যায়নি। এ জন্য আরও ১০টি অতিরিক্ত ফ্লাইটের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। শেষ সময়ে অনুমতি পাওয়া না গেলে এ সাড়ে ৬ হাজার হজ্ব যাত্রীর যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তবে বুধবারের মধ্যে অতিরিক্ত ফ্লাইটের অনুমতি মিলবে বলে জানিয়েছে হজ্ব অফিস।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ্ব শাখার কর্মকর্তারা জানান, বাতিল হওয়া ফ্লাইটের কারণে হজ্ব যাত্রীদের বহন করতে অতিরিক্ত ১০টি ফ্লাইটের স্লটের জন্য সৌদী সিভিল এভিয়েশনের (জিএসিএ) কাছে আবেদন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। যদিও গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত এ স্লটের অনুমতি মেলেনি।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ-সৌদী সরকারের কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ চলছে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। শেষ পর্যন্ত অনুমতি না মিললে বাতিল হওয়া ফ্লাইটের হজ্ব যাত্রীদের বাণিজ্যিক ফ্লাইটে হলেও পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন হজ¦ শাখার কর্মকর্তারা।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ¦ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব এসএম মনিরুজ্জামান জানান, অতিরিক্ত যে ১০টি ফ্লাইটের অনুমতি চাওয়া হয়েছে সেটা দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন হয় সে জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সৌদী সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সম্প্রতি সৌদীর হজ¦ ও ওমরা বিষয়ক উপমন্ত্রী আব্দুল ফাত্তাহ সুলাইমান মাশাতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে ১০টি ফ্লাইট চালানোর অনুমতি চেয়েছেন সৌদীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
সোমবার বিকেল পর্যন্ত ১ লাখ ২২হাজার ৫৫৬ জন হজ্ব যাত্রীর মধ্যে ভিসা পেয়েছেন ১ হাজার ২১ হাজার ৭১৫জন। এখনো ভিসা পাননি ৮৪১ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় শতভাগ হজ্ব যাত্রী ভিসা পেয়েছেন। বেসরকারি পর্যায়ে ভিসার হার ৯৯ শতাংশ। ভিসা পাওয়া বাকিদের মধ্যে দুটি এজেন্সির প্রতারণার কারণে ৫৮৩ জন হজ্ব যাত্রীর ভিসা এখনও হয়নি। বাকি হজ্ব যাত্রীদের ভিসা মঙ্গলবারের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাব।
ঢাকার হজ্ব অফিস (আশকোনা) জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২৩টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১৮টি ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। অনেক ফ্লাইট গেছে বেশ কিছু আসন খালি রেখে। প্রথম দিনই ১৪০ আসন খালি রেখে বিমান যাত্রা করেছিল।
গত রোববার ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, বাতিল হওয়া ফ্লাইটগুলোর জন্য শিগগিরই নতুন শিডিউল পাব। প্রত্যেক হজ¦যাত্রী হজ্বে যেতে পারবেন। কোনো হজ¦যাত্রী না যাওয়া পর্যন্ত ধর্ম মন্ত্রণালয় ফ্লাইট অনুমিতর জন্য চেষ্টা করবে।
ঢাকার আশকোনা হজ্ব ক্যাম্পের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সৌদী সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তারা হয়ত কাল পরশুর মধ্যে নতুন ফ্লাইটের স্লট দেবে।
তিনি জানান, আর অতিরিক্ত ৮-৯ ফ্লাইট পেলে সব হজ্ব যাত্রীকে সৌদি আরবে নেওয়া সম্ভব হবে। যাদের ভিসা হয়নি, তাদের ভিসা করার জন্য সংশ্লিষ্ট হজ্ব এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।