একেএম আবদুর রহীম, ফেনী: বাংলাদেশ-ভারত আন্তঃসীমান্ত ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহারের পদ্ধতি নিয়ে ভারতের দেয়া প্রস্তাবের বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।
ভারত চাইছে তারা নদীর মাঝখানে গভীর কূপ খনন করে পাইপের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করবে। কিন্তু বাংলাদেশ এ প্রস্তাবে সম্মতি দেয়নি। ঢাকা তাদের প্রস্তাবে জানিয়েছে নদীর পাড়ে কূপ খনন করে পানি প্রত্যাহার করতে।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম অঞ্চলে খাবার পানির সঙ্কট দূর করতে এই ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক পানি উত্তোলনের বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছিল।এই সমঝোতা বাস্তবায়নে গত ১২ জুন দু’দেশের টেকনিক্যাল কমিটি কূপ খননের স্থান নির্ধারণ ও পানি উত্তোলনের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে নদীর সম্ভাব্য কিছু স্পটে যৌথ পরিদর্শন করেন।
কিন্তু পানি উত্তোলনের পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধের কারণে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে পারেননি কর্মকর্তারা।
সে সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়, ফেনী নদীর মৈত্রী সেতু থেকে কয়েক মিটার দূরে ভারতীয় অংশে নদীর পাড়ে এই কূপ খনন করতে এবং সেখান থেকে নালার মাধ্যমে পাম্পের সাহায্যে পানি উত্তোলন করা হবে।
কিন্তু ভারত তাদের প্রস্তাবে নদীর মাঝখানে কূপ খননের কথা বলে আসছে। ভারতের দাবি, খাল কেটে পাম্প দিয়ে পানি প্রত্যাহার করলে বার বার পলি জমে যাবে। কিন্তু নদী থেকে সরাসরি পানি তুললে সেই আশঙ্কা নেই। সেইসাথে খাল খনন করা বা রক্ষণাবেক্ষণের ঝক্কিও থাকবে না।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাল্টা যুক্তি দেয়া হয়, এ ধরনের পলি প্রতিরোধে আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে।
কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি দু’দেশের প্রকৌশলীরা : ভারতের এই প্রস্তাবনার প্রকৌশলগত যথার্থতা খতিয়ে দেখতে গত ১২ জুন দু‘দেশের যৌথ কারিগরি কমিটি মূলত নদীর বর্তমান পানি প্রবাহ এবং কূপ খননের সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণ করতে সেখানে যান। পরিদর্শন শেষে বৈঠকে ‘নদীতে কূপ খনন’ এবং ‘নদীর পাড়ে কূপ খনন’ এ নিয়ে দু’পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। দু’পক্ষ কেবল যার যার প্রস্তাব শুনেছেন। এর আগে গত বছরও যৌথ কমিটি ওই এলাকা পরিদর্শন করে কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। এ নিয়ে দু’দেশের প্রকৌশলীরা তাদের প্রস্তাবনা লিখিতভাবে প্রথমে যৌথ নদী কমিশনে এবং সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা জানিয়েছে।
এ বিষয়ে ভারতের প্রতিনিধি দলের প্রধান ত্রিপুরার পিডব্লিওডি চিফ ইঞ্জিনিয়ার শ্যাম লাল ভৌমিক সাংবাদিকদের জানান, ‘বাংলাদেশ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল নদীর পাড়ে কূপ খননের জন্য। আমরা কারিগরি দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের বুঝিয়েছি, নদীর পাড়ে কূপ খনন করলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাইছি যে নদীর মাঝখানে কূপ খনন হোক। বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা বলেছেন তারা এ বিষয়ে তাদের মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে আমাদের জানাবেন। আমরা আমাদের প্রস্তাবনা পাঠাবো। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত পেলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।’
এ বিষয়ে যৌথ নদী কমিশনের সদস্য আবুল হোসেন জানান, ‘গত বছর দু’দেশ সম্মত হয়েছিল যে ভারত তাদের অংশে নদীর পাড় থেকে ৫০ মিটার ইনটেক চ্যানেল বা খাল কাটবে। সেখানে পাম্প বসিয়ে তারা পানি উত্তোলন করবে।’
‘এ নিয়ে তারা আগে সম্মত হলেও এখন তারা বলছেন খাল কাটলে সেখানে পলি জমে যাবে। আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কংক্রিটের বেষ্টনী দিয়ে পলি আটকে দেয়া যেতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভারত চাইছে নদীর মাঝখান থেকে পানি তুলতে। অথচ এ নিয়ে গত বছর কোন আলোচনাই হয়নি। বিষয়টি দু’দেশের প্রকৌশলীরা খতিয়ে দেখছেন। নতুন লোকেশন নিয়েও তারা আলোচনা করেছেন।’ নদীর গভীরে কূপ খননে ঝুঁকি কোথায়
ভারতের পরিকল্পনা অনুযায়ী, নদীর মাঝখানে কূপ খনন করা হলে নদী ভাঙনের ঝুঁকি রয়েছে বলে যৌথ নদী কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত জানান, নদীর গতিপথ, বাঁক এবং এর গভীরতা ক্রমশ পরিবর্তনশীল। এজন্য ভারত যে পাড়ে খাল কেটে পানি উত্তোলন করবে ১০ বছর পর তা অগভীর হয়ে যেতে পারে। কিন্তু নদীর গভীরে মাঝখান থেকে পানি তুললে নদীর আচরণে পরিবর্তন হবে। এর প্রভাবে পাড় ভাঙতে শুরু হবে।
এছাড়া নদীর মাঝখান থেকে পানি উত্তোলন করা হলে নদী প্রবাহ ও নদীর নাব্যতায় প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার (ওয়ারপো) সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী মুহাম্মদ ইনামুল হক।
এর কারণ হিসেবে তিনি বলছে ফেনী নদী এমনিতেই সংকীর্ণ। ফলে পানির অভাবে সহজেই শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
২০১৯ সালে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সমঝোতা স্মারক হবার পর বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, সম্পূর্ণ মানবিক কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক পানি ত্রিপুরার সাব্রুম শহরে সরবরাহ করা হবে, যাতে সেখানে পানীয় জলের প্রয়োজন মেটানো যায়। নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক পানি উত্তোলন মানে প্রতি সেকেন্ডে ৫২ লিটার এবং দিনে প্রায় ৪৫ লাখ লিটার পানি প্রত্যাহার করা। তবে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার কয়েক দশক আগে থেকেই এই নদীটি থেকে ভারত অবৈধভাবে পানি প্রত্যাহার করে আসছে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিযোগ তুলেছেন।
সে বিষয়ে সুরাহা না করেই নতুন করে পানি উত্তোলনের সমঝোতা করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
হক বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন ভেঙে শূন্য রেখা থেকে দেড় শ’ গজ ভিতরে ভারতের সাবরুম মহকুমার কয়েকটি পয়েন্টে কমপক্ষে ৫০টি পাম্প বসানো হয়েছে বলে জরিপে দেখা গেছে।
বিদ্যুৎচালিত উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্পের মাধ্যমে দেশটি একতরফাভাবে নদীর থেকে পানি তুলে নিচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। তিনি বলেন, এ পাম্পগুলোর প্রতিটির ন্যূনতম ক্ষমতা দুই কিউসেক।
বিবিসির সংবাদদাতা, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার পর পর রামগড় এলাকায় গিয়ে নদীর তীরে ভারতীয় অংশে এমন পানির পাইপ এবং পাম্প মেশিনের অস্তিত্ব দেখেছেন। তখন স্থানীয়রা বলেছিলেন, ২০০২ সাল থেকে এখান দিয়ে পানি তুলছে ভারত।
অবৈধভাবে পানি উত্তোলনের কারণে শুষ্ক মৌসুমে নদীর বিভিন্ন স্থানে বালুচর জেগে ওঠার পাশাপাশি দুই তীরে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।
বিশেষ করে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প ‘মুহুরি প্রজেক্ট’ হুমকির মুখে পড়েছে বলে মত পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো)’র সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী মুহাম্মদ ইনামুল হকের।
‘সমঝোতায় যে পরিমাণ পানি উত্তোলনের কথা বলা হয়েছে সেটুকু করলে খুব একটা প্রভাব পড়ত না। কিন্তু ভারত অবৈধভাবে আগে থেকেই পানি তোলায় মুহুরি প্রজেক্টে পানি কম আসছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর আরো নেমে যায়। সেচ দেয়ার অবস্থা থাকে না।’
অবৈধ পানি উত্তোলন ঠেকাতে যৌথ নদী কমিশনসহ দু’দেশের উচ্চপর্যায়ের একাধিক বৈঠকে বাংলাদেশ আপত্তি জানালেও ভারত কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন বিশেষজ্ঞরা।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দক্ষতা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলেছেন। এ বিষয়ে হক জানান, যৌথ নদী কমিশনকেও যথেষ্ট তথ্য সমৃদ্ধ হয়ে বিষয়টি মোকাবিলা করা প্রয়োজন এবং বাংলাদেশের কূটনৈতিক শক্তি প্রয়োগ করা জরুরি।
এর আগে, দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের বৈঠকে শূন্য রেখা থেকে পাম্প সরিয়ে নিতে বিএসএফ এর সাথে বৈঠকে বিজিবি তাগাদা দিলেও জানানো হয়েছিল, এটি তাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, শুকনো মৌসুমে ফেনী নদীর পানির গড় পরিমাণ ৭৯৪ কিউসেক এবং বার্ষিক পানির গড় পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৮৭৮ কিউসেক। ফলে ১,৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার মানে শুষ্ক মৌসুমের গড় পানি প্রবাহের মাত্র ০.২৩ শতাংশ। ফলে চুক্তি অনুসারে ১.৮২ কিউসেক পানি উত্তোলন করলে ফেনী নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়।
তবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ফেনী নদীতে বর্ষা মৌসুমে আট হাজার থেকে দশ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহিত হয়।
কিন্তু শুকনো মৌসুম অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ফেনী নদীতে ৪৭ থেকে ৫০ কিউসেক পানি থাকে।
অথচ ২০ বছর আগে এই নদীতে শুষ্ক মৌসুমে ১২০ কিউসেক পানির প্রবাহ ছিল বলে জানিয়েছেন ওয়ারপোর সাবেক মহা-পরিচালক ইনামুল হক। অবৈধ পানি উত্তোলনই এ প্রধান কারণ বলে তিনি মনে করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড যেখানে পানি পরিমাপ করে, ভারত তার পাঁচ কিলোমিটার উজানে পানি পরিমাপ করে থাকে।
যৌথ নদী কমিশনে ভারতীয় তথ্য অনুযায়ী শুষ্ক মৌসুমে ফেনী নদীতে পানি প্রবাহ থাকে ১০৯ কিউসেক।
এমন অবস্থায় ফেনী নদী থেকে পানি কোন মৌসুমে এবং কোন অনুপাতে তোলা হচ্ছে সে বিষয়ে দু’দেশের পরিষ্কার ধারণা রাখা প্রয়োজন বলে জানান পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত।
ফেনী নদীর পানি বন্টন নিয়ে সমঝোতা বাস্তবায়নের আগে চারটি বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত। প্রথমত, শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের পানির চাহিদা নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের সেচ প্রকল্প বা মুহুরি প্রজেক্টের চাহিদা নিশ্চিত করা। তৃতীয়ত, নদীর অববাহিকা ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা করে ভবিষ্যতের বাড়তি চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করা এবং চতুর্থত, নদীতে মাছের প্রজনন ও বিচরণ নির্বিঘœ করতে এবং নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পরিবেশগত সমীক্ষা করা।
অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে শুরুতে সব ঠিক থাকলেও একপর্যায়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমনটা হয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে।
দু’দেশের অভিন্ন সিন্ধু নদী নিয়ে ১৯৬২ সালে যে চুক্তি হয়েছিল সেটি নিয়ে এখন সমস্যা শুরু হয়েছে।
এক্ষেত্রে সমঝোতা বাস্তবায়নের পরে কখনো নদীর গতি প্রকৃতিতে পরিবর্তন এলে দু’দেশ যেন যৌথভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় সে ব্যাপারে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দু’ভাবেই বাংলাদেশকে শক্তিশালী ভূমিকা নেয়ার কথা জানান তিনি।
ত্রিপুরার সাবরুমের বাসিন্দারা দৈনিক পানির চাহিদা মেটাতে মূলত ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভর করে। কিন্তু ওই পানিতে লোহার পরিমাণ বেশি থাকায় অভিন্ন ফেনী নদী থেকে পানি উত্তোলন জরুরি হয়ে পড়ে।
সাবরুমে সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে এক দশক আগে থেকেই দু’দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।
যৌথ নদী কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, নদীটি থেকে ১,৮২ কিউসেক পানি উত্তোলনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল ২০১০ সালে। এই পানি তুলতে ‘লো লিফ্ট’ পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত হয় ২০১২ সালে।
ওই বছর কারিগরি কমিটির বৈঠকে সাতটি শর্তে পানি উত্তোলনের কথা বলা হয়।
শর্তের মধ্যে রয়েছে : পানি উত্তোলনের পরিমাণ ১,৮২ কিউসেকের বেশি হবে না এবং বিষয়টি দু’দেশের প্রকৌশলীরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিশ্চিত করবে।
পানি সরবরাহের পাইপ একটির বেশি হবে না।
লঞ্চিং অ্যাপ্রোচ বা পাইপ লাইনের প্রশস্ততা ৭.৬৫ মিটারের পরিবর্তে ৪.৫ মিটার হবে।
পাম্পের বৈশিষ্ট্য চূড়ান্ত হলে বাংলাদেশে সরবরাহ করতে হবে।
উভয় দেশের প্রকৌশলীরা পাম্পের সক্ষমতা যাচাই করবে।
কূপ খননের স্থান উভয় দেশের প্রধান প্রকৌশলীরা নির্ধারণ করবেন।
কূপ খননের ফলে ফেনী নদীর বাংলাদেশের দিকে ভাঙন দেখা দিলে ভারত ওই অংশের নদী তীর সংরক্ষণের কাজ বাস্তবায়ন করবে।
তবে এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে আরো সাত বছর লেগে যায়।
বাংলাপিডিয়ার তথ্য মতে, ১১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ফেনী নদী, ত্রিপুরার পূর্বাঞ্চলীয় পর্বত উৎপন্ন হয়ে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার বেলছড়ি নামক স্থান দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
এরপর নদীটি খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও মিরসরাই এবং ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।
বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল এবং সমতলে ফেনী জেলার দু’পাড়ের মানুষদের জীবনের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে ফেনী নদীর। বেশ কয়েকটি উপনদী এসে ফেনী নদীর সাথে মিশেছে।
তাই ফেনী নদীর পানি কমে গেলে এই উপনদীগুলোতেও পানি প্রবাহ কমে যাবে। এতে নদীর জীব-বৈচিত্র্য এবং নদীর তীর সংলগ্ন বাসিন্দারা হুমকির মুখে পড়বে বলে মত বিশেষজ্ঞদের