ডেঙ্গু বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। সংক্রমণের বেশির ভাগই ঢাকা শহরে। প্রতিদিন যত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে এর ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই এই শহরের বাসিন্দা। জনবহুল এই শহরের এমন অনেক স্থান রয়েছে যেখানে পানি জমে থাকলেও তা দেখার কেউ নেই। ফলে এসব এলাকায় ডেঙ্গু জীবাণুবাহী এডিস মশা বংশ বৃদ্ধি করছে।
দিন যাচ্ছে আর আগের দিনের চেয়ে দ্বিগুণ অথবা এর চেয়ে বেশি হচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বর্ষা মৌসুম শুরু হতেই ডেঙ্গুর শঙ্কায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। গত শুক্রবার সকাল ৮টার পর থেকে গতকাল শনিবার সকাল ৮টার আগ পর্যন্ত দেশে ৪৭৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এবং রোগটিতে ভোগে মৃত্যুবরণ করেছে চারজন। এটাই চলতি ডেঙ্গু মৌসুমে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা। ডেঙ্গুর পুরো সিজন শুরু হলে ডেঙ্গুর সংক্রমণে দেশবাসী বিপর্যস্ত অবস্থা হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতর ডেঙ্গু সংক্রমণে বেশ কয়েকবার সতর্ক করে দিয়েছে দেশবাসীকে সচেতন হওয়ার জন্য। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪০২ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৫ জন।
চলতি জুনের গতকাল ১৭ জুন পর্যন্ত সারা দেশে মোট ২ হাজার ৫৮১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত। এর আগের ৫ মাসেও এতো মানুষ রোগটিতে আক্রান্ত হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, জুন মাসের শেষ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার পৌঁছে যেতে পারে। একই সাথে ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। এই জুনেই সারা দেশে ডেঙ্গুতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের ৫ মাসেও এতো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট এক হাজার ১৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৯১১ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ২২৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত চার হাজার ৬০৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় তিন হাজার ৫৭৫ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন এক হাজার ২৮ জন। এদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ হাজার ৪৩২ জন। ঢাকায় ২ হাজার ৬৩৭ এবং ঢাকার বাইরে ৭৯৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।