দেশের বৈদেশিক ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৬২৫ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকা। ২০২১ সালে ছিল ৯ হাজার ৮০ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। ডলারের হিসাবে এক বছরে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৫৪৫ কোটি ডলার। বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ। টাকার হিসাবে বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। ডলারের বিপরীতে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়নের কারণে টাকার হিসাবে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, মোট ঋণের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ হচ্ছে ৭ হাজার ৭৭২ কোটি ডলার। যা মোট ঋণের ৮১ শতাংশ। এর মধ্যে সরকারি খাতে ৬ হাজার ৯৮২ কোটি ডলার। বেসরকারি খাতে ৭৮৯ কোটি ডলার। দীর্ঘ ঋণের বড় অংশই সরকারি খাতে। বেসরকারি খাতে ঋণের অংশ খুবই কম। তবে স্বল্পমেয়াদি বেসরকারি খাতে বেশি। সরকারি খাতে কম। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের মোট বৈদেশিক ঋণের কারণে সার্বিক অর্থনীতিতে বড় ঝুঁকি না হলেও স্বল্পমেয়াদি ঋণের কারণে ডলার বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে। কেননা স্বল্পমেয়াদি ঋণ দ্রুত পরিশোধ করতে হয়। এগুলো পরিশোধ করলেই ডলার বাজারে চাপ পড়ে।
প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, দেশের মোট স্বল্পমেয়াদি ঋণ হচ্ছে ১ হাজার ৮৫৩ কোটি ডলার। যা মোট ঋণের ১৯ শতাংশ। এর মধ্যে সরকারি খাতে ২১১ কোটি ডলার এবং বেসরকারি খাতে ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার। বেসরকারি খাতের ঋণের বড় অংশই এলসির বিপরীতে নেওয়া।
মোট বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ৭৫ শতাংশই সরকারি খাতে। বেসরকারি খাতে ২৫ শতাংশ। দেশের মোট জিডিপির ২২ শতাংশ বৈদেশিক ঋণ।
প্রতিবেদন থেকে আরও দেখা যায়, অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও দেশ থেকে বিদেশে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এর বড় অংশই বিদেশে পরিচালিত কোম্পানির মুনাফা থেকে অর্জিত অর্থ পুনরায় বিনিয়োগ করা। ২০২১ সালে বিদেশে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগের স্তিতি ছিল ৩৯ কোটি ডলার। ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি ডলারে। এক বছরে বিনিয়োগ বেড়েছে ১ কেটি ডলার। ২০২১ সালে আগের বছরের তুলনায় এ খাতে বিনিয়োগের স্তিতি বেড়েছিল ১৯ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২১ সালের তুলনায় গত বছরে এ খাতে স্থিতি বেড়েছে ২ দশমিক ৬ শতাংশ।