দেশের ৫২ জেলায় মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চলমান এই তাপপ্রবাহ আরো এক সপ্তাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। দেশের সব অঞ্চলে বর্ষা না আসা পর্যন্ত তাপপ্রবাহ কমার সম্ভাবনা নেই বলে মত আবহাওয়াবিদদের।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এ ছাড়া ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সব জেলা, রংপুর বিভাগের বাকি ছয় ও রাজশাহী বিভাগের বাকি ছয় জেলা এবং মৌলভীবাজার, চাঁদপুর ও নোয়াখালী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজও এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে তাপপ্রবাহের বিদায়ের জন্য প্রয়োজন বর্ষার বৃষ্টি। আমরা আশা করছি চলতি মাসের ৭-৮ তারিখের দিকে বাংলাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষাকাল) প্রবেশ করতে পারে।
১০ তারিখের মধ্যে দেশের অনেক জায়গায়ই বর্ষা মৌসুম বিস্তার লাভ করবে। যেসব জায়গায় বর্ষা বিস্তার লাভ করবে, সেসব জায়গা থেকে তাপপ্রবাহ কমে আসবে। তবে অনেক জায়গা থেকে তাপপ্রবাহ কমে এলেও আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সারা দেশ থেকে একেবারে তাপপ্রবাহ চলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। এটি বর্ষা বিস্তার লাভ করার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকবে।
’এদিকে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৪৪টি স্টেশনের মধ্যে চারটিতে বৃষ্টির খবর মিলেছে। সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে ৩৭ মিলিমিটার। তবে এই ধরনের বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে তাপপ্রবাহ কমবে না বলে জানান আবহাওয়াবিদরা।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আগের দিনও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৪০.৫ ডিগ্রি। এ ছাড়া গতকাল দিনাজপুরে ৪০.৬, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৪০.৩, নওগাঁর বদলগাছীতে ৪০, পাবনার ঈশ্বরদীতে ৩৯.৬ ও চুয়াডাঙ্গায় ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। গতকাল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।এদিকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে অধিদপ্তর জানিয়েছে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আমাদের নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে জেলার সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। গতকাল শনিবার জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে তীব্র গরমে মানুষের ভোগান্তি চোখে পড়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাস্তায় বের হতে দেখা যায়নি।
দুপুর ২টার দিকে বিশেষ প্রয়োজনে শহরে এসেছিলেন ইটাখোলা ইউনিয়নের কৃষক আসাদুল ইসলাম (৫৫)। তিনি জানান, গরমে টেকা যাচ্ছে না। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ভোগান্তি বেড়েছে।
https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2023/06/04/1286507