১ জানুয়ারি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় প্রতি কেজি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা দরে। ফেব্রুয়ারিতে দাম বেড়ে বিক্রি হয় ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি দরে। এক মাসের ব্যবধানে মার্চে কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়। এপ্রিলে কেজিতে ১০ টাকা কমে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হয়। মে মাসে আবার কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা হয়। গত এক মাসের ব্যবধানে মুরগির দাম কিছুটা কমে জুনের শুরুতে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
টিসিবির বাজারদরের তালিকায় ১ জানুয়ারিতে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। ১ জুনের তালিকায় দেখা যায় ব্রয়লার মুরগির দাম হয়েছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। এই মাসগুলোতে মুরগির দাম কয়েক দফা ওঠানামা করেছে।
এ ছাড়া ১ জানুয়ারি দেশি রসুনের কেজি ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা, দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। আমদানি করা প্রতি কেজি রসুনের দাম ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, সেই রসুন গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায়। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ডিমের হালি ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, দাম বেড়ে এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
গত ছয় মাসে বাজারগুলোয় পেঁয়াজ ও আদার দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় এই পণ্য দুটির চাহিদা ও বিক্রি কমেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
বাড্ডার ভ্যারাইটিজ স্টোরের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সবচেয়ে বেশি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে এই ছয় মাসে। তবে পেঁয়াজ, আদা ও চিনির দাম সবচেয়ে বেশি বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়ার কারণে বিক্রিও কমে গেছে। যারা আগে একসঙ্গে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কিনত, তারা এখন দু-এক কেজির বেশি নিচ্ছে না।’
বেসরকারি একটি এনজিওতে কর্মরত মো. শেখ রুবেল। দফায় দফায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে সব জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত ছয় মাসে আমার পরিবারে বাজার খরচ চার-পাঁচ হাজার টাকা বেড়ে গেছে। কিন্তু ছয় মাসে আমার এক টাকাও আয় বাড়েনি। এতে বাধ্য হয়ে খরচ কমাতে তালিকা কাটছাঁট করা হয়েছে। তার পরও সংসার চালাতে আমাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তারা কষ্টে আছে। যেহেতু বাজারে এখন পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে, তাই সরকার আমদানির অনুমতি দিতে পারে। তাহলে পেঁয়াজের বাজারটি নিয়ন্ত্রণে আসবে। আমদানির দিকে নির্ভর না করে দেশে যাতে উৎপাদন বাড়ানো যায়, সেদিকে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। তবে বাজারে যেভাবে পণ্যের দাম বেড়েছে, এতে ব্যবসায়ীদের বড় সিন্ডিকেট কাজ করছে। তাই বাজার মনিটরিং জোরদার করা দরকার। একই সঙ্গে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ভোগ্য পণ্যের আমদানি ঠিক রাখতে হবে।’
https://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2023/06/04/1286496