# এ সপ্তাহে শুরু হবে টিকার বুস্টার ডোজ
স্টাফ রিপোর্টার : গত বছরের চেয়ে এবছর ডেঙ্গুরোগী পাঁচগুণ বেশি জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, গত জানুয়ারি থেকে ২৮ মে পর্যন্ত মোট এক হাজার ৭০৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১৩ জন। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে করোনা টিকা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশে এবং আশপাশের দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের অধিদপ্তর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জানুয়ারি থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ১ হাজার ৭০৪ জন ডেঙ্গুরোগী পেয়েছি। এসময়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা যদি গত বছরের তুলনা করি, এবছর রোগীর সংখ্যা প্রায় পাঁচগুণ। অর্থাৎ অনেক রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডেঙ্গু রোধে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের হাসপাতালের পরিচালকদের সঙ্গে ডিজির (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক) বৈঠক হয়েছে, হাসপাতালে যেন প্রস্তুতি থাকে। আমাদের ডাক্তার-নার্সদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে ডেঙ্গু সার্ভে, সেটি চলমান। রিপোর্ট দুই সিটি করপোরেশনকে দিয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, হাসপাতালে যেহেতু রোগী বাড়ছে, সেহেতু এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। ডেঙ্গুরোগীদের জন্য হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড এবং আলাদা কর্নার তৈরি করা হয়েছে। বছরখানেকের মধ্যে আমরা আড়াই হাজার ডাক্তার এবং নার্সকে ট্রেনিং দিয়েছি।
তিনি বলেন, জনগণকে সচেতন করার জন্য আমরা বিভিন্ন মহলকে যুক্ত করেছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক আছেন, ছাত্রছাত্রী আছেন, তাদের মাধ্যমে এটা প্রচার করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও যুক্ত করা হয়েছে, যারা জনগণকে সতর্ক করতে পারে, কীভাবে ডেঙ্গুরোগ থেকে বাঁচা যায়, মশার কামড় থেকে বাঁচা যায় এবং ডেঙ্গু হলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসা নেওয়া, এ বিষয়েও বলা।
এ বিষয়ে প্রচার-প্রচারণার জন্য পোস্টার, ব্যানার এবং টিভিতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান জাহিদ মালেক। ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মিটিং আহ্বান করেছিল। সেখানে আমাদের প্রতিনিধি গেছে। জরুরি কোনো ব্যবস্থা যদি নিতে হয়, সেজন্য প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।’ যোগ করেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের মাধ্যমে আমরা জনগণকে অবহিত করতে চাই যে, আপনারা ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিন। মানে বাসার আশপাশের আঙিনা পরিষ্কার রাখুন, নিজের ঘর স্প্রে করুন, আশপাশে যদি জঙ্গল থাকে সেখানে স্প্রে করুন এবং পানি বা যদি অন্যকিছু জমে থাকে সেগুলো সরিয়ে ফেলুন। এ কাজগুলো আমাদের নিজেদেরই করতে হবে। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে এসে তাড়াতাড়ি চিকিৎসা নেবেন। সময়মতো চিকিৎসা নিলে প্রায় সবাই ভালো হয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে বাংলাদেশকে ৩০ লাখ ডোজ করোনার টিকা দিয়েছে ফাইজার। এসব টিকা নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে বুস্টার ডোজ হিসেবে দেওয়া হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ৩৬ কোটির অধিক টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি। এরমধ্যে প্রথম, দ্বিতীয়, বুস্টারের দুই ডোজও রয়েছে। প্রথম ডোজ ৮৮ শতাংশ জনগণকে দিতে সক্ষম হয়েছি। দ্বিতীয় ৮২ শতাংশ ও তৃতীয় ডোজ প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষকে দিতে সক্ষম হয়েছি। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো। তিনি বলেন, ‘গড়ে আমরা ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ লোককে টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি। বিশ্বে গড় ৭২ শতাংশ। স্বল্পোন্নত দেশে মাত্র ৩০ শতাংশ। আমাদের টিকাদান কর্মসূচি চলমান রয়েছে। টিকা নেওয়ার লোক এখন কম তুলনামূলকভাবে।’
আমরা নতুন কিছু টিকা পেয়েছি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে। সেই টিকা ফাইজার তৈরি করেছে। নাম হলো ভিসিভি বা ভ্যারিয়ান্ট কনটেইনিং ভ্যাকসিন। এই টিকাটি নতুন উদ্ভাবিত টিকা এবং বিভিন্ন দেশে দেওয়া হচ্ছে। বুস্টার ডোজ হিসেবে আমরা এই টিকাটি দেবো। আমরা প্রায় ৩০ লাখ ডোজ টিকা এরই মধ্যে পেয়েছি। তৃতীয় এবং চতুর্থ ডোজ আমরা এই টিকার মাধ্যমে দেবো। এই টিকার অনুমোদন ডব্লিউএইচও-র রয়েছে।’
‘আমরা সারাদেশে সিটি করপোরেশন, জেলা-উপজেলায় যে টিকাকেন্দ্রগুলো আছে, সেখানে আমরা এই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করছি।’ চলতি সপ্তাহ থেকে ফাইজারের টিকা তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ হিসেবে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।