বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন,পবিত্র মাহে রমজানের দীর্ঘ একমাস আমরা সিয়াম ও কিয়াম পালনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কালামে পাকে রমজান মাসকে মুমিনদের তাকওয়া অর্জনের মাস হিসাবে ঘোষণা করেছেন। তিনি রমজান থেকে অর্জিত আল্লাহর ভয়কে কাজে লাগিয়ে তা বাকি ১১ মাস বাস্তবজীবনের প্রতিফলনের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় রমজানের কল্যাণ থেকে আমরা পুরোপুরি বঞ্চিত হবো।
তিনি গতকাল রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত রুকনদের নিয়ে এক ভার্চুয়াল ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম। আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাফজুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক প্রমূখ।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, মূলত আত্মশুব্ধি, তাজকিয়া ও তাকওয়া অর্জনের মাস পবিত্র মাহে রমজান। যা প্রত্যেক মু’মিনের সাফল্য ও ব্যর্থতার মানদন্ড। সূরা বাকারার ১৭৭ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন তাকওয়া অর্জনের জন্য ১৭ টি গুনের কথা উল্লেখ করেছেন। যা প্রত্যেক মানুষের জীবনকে আলোকিত ও সাফল্যমন্ডিত করার এক অনন্য সাধারণ দিক নির্দেশনা। তাই আমাদেরকে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে হলে এই ১৭ টি গুণ অর্জনের জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা করতে হবে।
তিনি বলেন, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। বস্তুত ইসলাম একটি আপোষহীন জীবন বিধানের নাম। যারা ইসলামকে জীবন বিধান হিসাবে মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছে, তাদের জীবন হয়ে ওঠে ন্যায়-ইনসাফের প্রতীক ও আপোষহীন। অন্যায় ও অসত্যের সাথে তাদের পক্ষে কোন ভাবেই আপোষকরার সুযোগ নেই। তিনি ইসলামী আন্দোলনের সকল স্তরের জনশক্তিকে সত্য, ন্যায় ও ইনসাফের প্রতি অবিচল থাকার আহবান জানান। তাহলে ইসলাম একদিন বিজয়ী আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, সহমর্মিতার এমাসে সরকারের আচরণ জাতিকে হতবাক ও বিস্মিত করেছে। তারাবির নামাজ থেকে নারী, শিশু ও মুসল্লীদের এবং ইফতার অনুষ্ঠান থেকে রোজাদারদের গ্রেফতার করে সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে রোজাদারদের হয়রানি করা হয়েছে। সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সহ কারারুদ্ধ নেতাদের সর্বোচ্চ আদালত বারবার জামিন দেয়ার পরও সরকার জেল গেট থেকে বারবার গ্রেফতার করে প্রমাণ করেছে তারা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী নয়। এসব নিন্দনীয় ঘটনার মাধ্যমে তারা দেশের সর্বোচ্চ আদালতকেও অসম্মান প্রদর্শন করেছে। তিনি সরকারকে নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুর রহমান মূসা বলেন, একটি আন্দোলনকে বিজয়ী করার জন্য সেই সংগঠনের মান ও জনশক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ। তাই এই জমিনে দ্বীনের বিজয়ের জন্য আমরা যে টার্গেট নির্ধারণ করেছি তা বাস্তবায়নের জন্য নিরলস নিরলস প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তিনি মাহে রমজানে অর্জিত তাকওয়ার গুণাবলী অনুযায়ি সকলকে আত্মগঠনে আত্মনিয়োগ করার আহবান জানান। তাহলেও কাক্সিক্ষত সফলতা আমাদের হাতে এসে ধরা দেবে।