বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, দেশে ইসলামী শ্রমনীতি চালু না থাকায় স্বাধীনতার ৫ দশক পরেও আমাদের দেশের শ্রমিকরা অধিকার বঞ্চিত ও অবহেলিত। মূলত, ইসলামী আদর্শের মধ্যেই রয়েছে বিশ্বমানবতার মুক্তি ও কল্যাণ। তিনি নায্য অধিকার আদায় শ্রমিকদের ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। অন্যথায় তাদের বঞ্চনা ও অবহেলার অবসান হবে না।
তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের রূপনগর থানা আয়োজিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর আবু হানিফের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাসির উদ্দীন। উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমীর মোশাররফ হোসেন, থানা কর্মপরিষদ সদস্য হাসান মু. ইউসুফ, লতিফুল খবির ও লিয়াকত হোসেন প্রমূখ।
ড. রেজাউল করিম বলেন, ঊনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত শ্রমিকদের ছিল না কোনো ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা, ছিল না কাজের নির্দিষ্ট সময়ের সীমা। মালিকরা তাদের খেয়ালখুশি মতো শ্রমিকদের দৈনিক ১২ থেকে ১৬ ঘন্টা পর্যন্ত একটানা শ্রম দিতে বাধ্য করতেন। সে জুলুমের প্রতিবাদেই ১৮৮৬ সালের পয়লা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে অনেক শ্রমজীবী মানুষ গড়ে তুলেছিলেন এক দুর্বার শ্রমিক আন্দোলন। সেই দিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১ হাজার ৫৬২টি শিল্পকারখানাসহ সব শিল্পাঞ্চলে আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন শ্রমিকরা। কিন্তু বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ওপর বিনা উসকানিতে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল সরকারের পুলিশ বাহিনী। ফলে ওই দিনই নিহত হয়েছিলেন ১০ জন শ্রমিক। আহত হন হাজার হাজার কর্মজীবী মানুষ। কিন্তু দীর্ঘকালের পরিক্রমায় শ্রমিক সমাজ আজো তাদের নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছেন। মূলত ইসলামী শ্রমনীতি অনুসরণ না করার কারণেই শ্রমিক সমাজ তাদের নায্য অধিকার পাচ্ছেন না। ব্যবধান ও বৈষম্য বাড়ছে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে। তাই অধিকার আদায়ে শ্রমিক সমাজকে ইসলামী আদর্শের পুরোপুরি অনুসরণ করতে হবে। তিনি দেশে ইসলামী শ্রমনীতি চালুর জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় শ্রমিক সমাজ অধিখার বঞ্চিতই থেকে যাবে।
মহানগরী সেক্রেটারি বলেন, গণবিচ্ছিন্ন সরকার এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে অস্থির হয়ে উঠেছে। তারা কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি পাশ কাটানোর নানাবিধ অপতৎপরতা শুরু করেছে। কিন্তু তাদের সে স্বপ্নবিলাস জনগণ কখনোই সফল ও স্বার্থক হতে দেবে না। তিনি সময় থাকতে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। অন্যথায় জনগণ সরকারকে যথোপযুক্ত জবাব দেবে।