ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার মাধ্যমে ঈদের আনন্দকে অর্থবহ ও সর্বজনীন করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসা।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের কাফরুল অঞ্চল আয়োজিত কারাবন্দী আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-১৫ আসনে এক ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ও অঞ্চল পরিচালক ডা. ফখরুদ্দীন মানিকের সভাপতিত্বে ও সহকারি পরিচালক শহীদুল্লাহর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা। আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও যুব বিভাগের সেক্রেটারি নাসির উদ্দীন, মিরপুর পূর্ব থানার আমীর শাহ আলম তুহিন ও কাফরুল পশ্চিম থানা আমীর আব্দুল মতিন খান প্রমূখ।
আব্দুর রহমান মূসা বলেন, ঈদ মানে আনন্দ হলেও এবারের ঈদের আনন্দ সার্বজনীন ও অর্থবহ হয়ে ওঠেনি। পবিত্র রমজান মাসে লাগামহীন মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের সিয়াম পালনও নির্বিঘ্ন হয়নি। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ব্যাপকভাবে কমলেও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সদ্য বিদায়ি ঈদের ওপর। সাধারণ মানুষ ঈদের আনন্দ তো দূরের কথা, নিজেদের অন্ন-বস্ত্রের সংস্থান করতে পারেনি। তাই আগামী দিনের ঈদগুলোকে সকল শ্রেণির মানুষের জন্য আনন্দঘন করতে সরকার, সমাজের বিত্তবান মানুষ সহ দলীয় নেতাকর্মীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান। অন্যথায় সাধারণ মানুষের জন্য ঈদের আনন্দ নিরানন্দই থেকে যাবে।
তিনি বলেন, এই মহিমান্বিত মাস দোয়া কবুল ও নাযাতের মাস। মানুষ যাতে তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি লাভ করতে পারে এজন্যই সিয়ামকে আমাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় করে দেয়া হয়েছে। কালামে পাকে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো’(সূরা আল বাকারা, আয়ত-১৮৩)। মূলত এই মাস হলো আত্মশুদ্ধি ও তাযকিয়া অর্জনের মাস। তাই সদ্য বিদায়ি এই মাস থেকে আমরা কী অর্জন করতে পেরেছি তা আত্মসমালোচনার মাধ্যমে ক্ষতিয়ে দেখার সময় এসেছে।
তিনি আরো বলেন, কারাগারে অন্তরীণ আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান একজন সজ্জন ব্যক্তি ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক। তিনি আজ মুক্ত থাকলে এ ধরনের অনুষ্ঠানে স্বয়ং উপস্থিত থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে এবং সমাজ উন্নয়নে আমাদেরকে অতি মূল্যবান দিক নির্দেশনা দিতে পারতেন। তিনি কারাগারে থেকেই আপনাদের খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। আর সে নির্দেশনা পেয়েই আমরা আজকে আপনাদের সাথে মিলিত হয়েছি। তাই আগামী দিনে এ অঞ্চলের উন্নয়নে সৎ, যোগ্য, নিষ্ঠাবান ও প্রতিশ্রুতিশীল নেতা নির্বাচনের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
মূলত, আমীরে জামায়াত অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কারাবন্দী থাকায় দেশ ও জাতি তার যোগ্যতর খেতমত থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সে ধারাবাহিকতায় মহানগরী আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনও এখন কারাগারে আটক রয়েছেন। তিনি অবিলম্বে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান ও মহানগরী আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন সহ সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তির আহবান জানান এবং কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন।