রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির মাস পবিত্র মাহে রমজানের হক যথাযথভাবে আদায় করে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য প্রত্যেক মুমিনকে সিয়াম ও কিয়ামের মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন ও আত্মগঠনের আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের তুরাগ থানা দক্ষিণ আয়োজিত স্থানীয় দ্ররিদ্রদের মধ্যে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর থানা আমীর মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক থানা আমীর সাইদুর রহমান ও থানা সেক্রেটারি আবু বকর প্রমূখ।
ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, রমজান আত্মশুদ্ধি, তাকওয়া ও তাজকিয়া অর্জনের মাস। এ মাসেই বিশ্ব মানবতার মুক্তির সনদ মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল করা হয়েছে। সুরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘রোযার মাস এমন একটি মাস যে মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছে। আর তা হচ্ছে মানব জাতির জন্য পথের দিশা, সৎপথের সুষ্পষ্ট নির্দশন, হক্ব ও বাতিলের পার্থক্যকারী’। তাই এই মহিমান্বিত মাসে সিয়াম ও কিয়াম পালন এবং সাদাকাতুল ফিতর ও যাকাত আদায়ের মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে হবে। তিনি রমজানের শিক্ষাকে বাস্তব জীবনে কাজে লাগিয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, সরকার পবিত্র মাহে রমজান মাসে রোযাদারদের সিয়াম পালন নির্বিঘ্ন করা সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু ঢাকা নগরীতে রমজান আসার আগেই সুপেয় পানির তীব্র সংকট শুরু। কোন রমজানেই সরকার গ্যাসের সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে পারেনি। এমনকি এই পবিত্র মাসেও ঢাকাকে লোডশেডিং মুক্ত করতে সরকার সব সময় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে এসেছে । পবিত্র রমজান আসার আগে নগরীতে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি এখন সকল সময়ের সীমা অতিক্রম করেছে। একই সাথে সরকার রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করতেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। প্রতি বছরই রমজান মাসে দিনের বেলা হোটেল রেস্তোরাঁ খোলা থাকলেও সরকার সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। বন্ধ করতে পারেনি অশ্লীলতা, বেহায়াপনা এবং নারীর নগ্ন প্রদর্শনী। তাই সরকারকে অতীত বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে এসে এই মোবারক মাসে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ, দিনের বেলা হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ ও এই মাসের পবিত্রতা রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি রোজাদারদের রোজা পালনকে নির্বিঘ্ন করতে নগরীর পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিকীকরণ সহ রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, আর্ত-মানবতার কল্যাণই ইসলামের মূল আদর্শ। আর জামায়াতে ইসলামী একটি গণমুখী, কল্যাণকামী, গণতান্ত্রিক ও আদর্শিক রাজনৈতিক দল। তাই মানুষের কল্যাণকামীতার অংশ হিসাবে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে আমরা দরিদ্র মানুষের দুর্দশা লাঘরে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করছে। এতে কেউ ন্যুনতম উপকৃত হলে আমাদের শ্রম সার্থক হয়েছে বলে মনে করবো। মহানগরী সেক্রেটারি আসন্ন রমজানের সাধারণ রোজাদার দুর্দশা লাঘবে এগিয়ে আসার জন্য সমাজের বিত্তবান মানুষ সহ সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।