মুরগির কেজি ২৩০, ডিমের হালি ৫০ টাকা
স্টাফ রিপোর্টার: নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বাড়ছেই। একেক সময় একেকটি পণ্যের দাম আকাশচুম্বী হয়ে যাচ্ছে। এবার বাজারে ব্রয়লার মুরগীর দাম আকাশচুম্বী। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগীর দাম দফায় দফায় বেড়েই যাচ্ছে। দেশের বাজারে রেকর্ড গড়েছে ব্রয়লার মুরগি। গরিবের গরুর গোশতখ্যাত এই মুরগির কেজি এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১০০ টাকা। গত কয়েকদিন ধরে খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২৫ থেকে ২৩০ টাকায়। এর আগে দেশের বাজারে কখনো ব্রয়লার মুরগির কেজি এত দামে বিক্রি হয়নি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এই পণ্যটি। প্রোটিন যোগানদানকারী এই ব্রয়লার মুরগি খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছেন তারা। অপরদিকে মুরগীর পাশাপাশি ডিমের দামও আকাশচুম্বী প্রতি হালি ডিম ৫০ টাকা। আর কাঁচা মরিচের দাম ১৬০ টাকা কেজি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগীর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২৫ থেকে ২৩০ টাকা কেজি। ব্রয়লার মুরগীর পাশাপাশি বেড়েছে সোনালি মুরগির দামও। বাজারে সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মতো। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকায়। বাজারে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকায়। গত এক মাসে দেশি মুরগির দামে অবশ্য বড় কোনো পার্থক্য নেই। বাজারে অন্যান্য গোশতের দামও বেড়েছে। গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। আর খাসির গোশত ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়। এদিকে ডিমের দামও বাড়তি। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও অনেক খামার বন্ধ হওয়ায় বাজারে ডিম ও মুরগির সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম নিয়েও বিপাকে পড়ছেন ক্রেতারা। কারণ প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। এখন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা ডজনে। প্রতি হালি ৫০ টাকা। যা আগে ৪৫ টাকা ছিল।
সবজি বাজারে দেখা গেছে, আকারভেদে বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। শসা প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা, লম্বা ও গোল বেগুন ৬০-৭০ টাকা, টমেটো ৩০-৪০ টাকা, শিম ৫০-৬০ টাকা, করলা ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি আকারভেদে ৫০-৬০ টাকা, কেজিপ্রতি মিষ্টি কুমড়া ৪০-৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৭০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, বরবটি ৯০-১০০ টাকা ও ধুন্দুল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়। লেবুর হালি ২০-৩০ টাকা।
পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। বড় রসুনের কেজি ২০০ টাকা। ছোট রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়। আদা বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। বাজারে খোলা চিনি প্রতি কেজি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা।
বাজারে খোলা আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। প্যাকেট আটার কেজি ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে কেজি ছিল ৭০ টাকা। ২ কেজির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। দেশি মসুরের ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০-১২৫ টাকা। বাজারে সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৭ টাকা। লবণের কেজি ৩৮-৪০ টাকা।
গোশতের চাহিদা মাছে মেটানোও দায় হয়েছে ক্রেতাদের জন্য। মাছ কিনতে তাদের নিম্নে কেজিপ্রতি ৩০০ টাকা করে গুনতে হয়। কেজিপ্রতি তেলাপিয়া ২০০ টাকা, কাতলা ও রুই ২৫০ থেকে ৩৪০, কালোবাউশ ২৫০, পোয়া ১২০ থেকে ১৫০, বড় বোয়াল ১০০০, সাগরের সুরমা ২০০, ইলিশ ৭০০ গ্রাম আকারভেদে ৫০০ থেকে ৬০০, টাকি ৩০০, শোল ৫০০ থেকে ৬০০, বড় চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০; টেংরা ছোট ২৪০, বড় ৬০০; বাইম ৪৫০ থেকে ৫০০ ও কাচকি ২৪০ টাকা।
এ ছাড়া চাল-ডালের দোকানে দেখা যায়, ২৮-‘এ’ চাল ৬০ টাকা কেজি, পাইজাম ৫৫ টাকা কেজি ও গুটি বা মোটা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি, মিনিকেট ৭৫ টাকা কেজি। মসুর ডাল ১০০ টাকা, মুগডাল ১৩০, খেসারি ডাল ৯০ ও বুটের ডাল ৭৫ টাকা কেজি।
সোর্স : দৈনিক সংগ্রাম