চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে শিবির সন্দেহে ৪ শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনা গণমাধ্যমে আসার পর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের সহপাঠীরা (৬২তম ব্যাচ) নিপীড়ক ছাত্রলীগ কর্মীদের শাস্তির আওতায় না আনা পর্যন্ত ক্লাসে যাবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার সকাল থেকে চমেকের ৬২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এই ক্লাস বর্জনের ডাক দেন। এই বিষয়ে ৬২তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মেডিকেল কলেজে মেধাবীরা পড়তে আসে। এই শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরিবার থেকে শুরু করে পুরো জাতি অনেক স্বপ্ন দেখে। আর তাদের জীবন ছাত্রনামধারী গুটিকয়েক সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি থাকা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কর্তৃপক্ষ এই নির্যাতনকারীদের শাস্তি নিশ্চিত না করলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শনিবার সকালে শিক্ষকদের নিয়ে সাধারণ সভা করেছে কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শাহানা আক্তার। সভায় আগে থেকে গঠিত অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটিকে ঘটনাটি তদন্ত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এজন্য কর্মপরিকল্পনা নেয়ার জন্য শিক্ষকদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ ডা. শাহানা আক্তার মানবজমিনকে বলেন, শনিবার সকালে আমরা সকল শিক্ষকদের নিয়ে বসেছি। সেখানে সৃষ্ট সংকট নিয়ে কথা বলেছি। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কী করণীয় তা নিয়ে আলোচনা করেছি। ছাত্র নির্যাতনকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসল ব্যাপার হচ্ছে সকল মিডিয়ায় নির্যাতনের বিষয়ে কথা হচ্ছে। তবে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরাই তো আমাদেরকে কিছু মুখ খুলে বলছে না। তারা কেন বলছে না তা আমরা বুঝতে পারছি না। ডা. শাহানা বলেন, তারা বলছে বাথরুম থেকে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে। এখন যদি তারা এভাবে বলে আমরা আর কী করতে পারি। তবে আমরা বিষয়টি খুব ভালোভাবে খতিয়ে দেখছি। প্রসঙ্গত, গত বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসের বিভিন্ন কক্ষ থেকে শিবির সন্দেহে ৪ শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন, চমেকের ৬২তম ব্যাচের ছাত্র এম এ রাইয়ান, মোবাশ্বির হোসাইন শুভ্র, জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেন। আহতদের মধ্যে জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেনকে চমেক হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রতে (আইসিইউতে) ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া আহত এমএ রাইয়ান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং শুভ্র নারায়ণগঞ্জে একজন অর্থোপেডিক্স বিভাগের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সোর্স : মানবজমিন