মুহাম্মাদ আখতারুজ্জামান: প্রতি বছর বাড়তে বাড়তে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে পাইপলাইনে থাকা ঋণ। চলতি অর্থবছরও (২০২১-২২) বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) অর্থ ব্যবহার করতে না পারায় ঋণসহায়তা কমেছে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার বা ১৭ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। সুর্নিষ্ট পরিকল্পনা প্রনয়ণ, অব্যবস্থাপনা এবং সময়মতো এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের তাগিদ না থাকার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও পরিকল্পনা অনুযায়ী যেসব অবকাঠোমো উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে, সে সব প্রকল্পগুলোতে নেই সঠিক মনিটরিং ব্যবস্থা, যে কারণে যথাসময়ে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ঋণ ব্যবহারের অদক্ষতা ও বৈদেশিক পলিসি মেনে চলাসহ নানান কারণে বিদেশী ঋণ সময়মতো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সরকার দেশী টাকা ব্যবহারে যতটা পারদর্শী, বিদেশী টাকা ব্যবহারে ততটাই অদক্ষতা দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের।
স্বাধীনতার পর থেকে ২০২২ সালের জুন। এই ৫১ বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছ থেকে ঋণ এসেছে ৭ হাজার ৭১৫ কোটি বা ৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই সময়ে অনুদান এসেছে ১ হাজার ৭৫৪ কোটি বা ১৭ বিলিয়ন ডলার। ঋণ ও অনুদান মিলে উন্নয়ন সহযোগীদের নিকট থেকে প্রকল্পের আওতায় ৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে পাইপলাইনে পড়ে আছে ৪৫ বিলিয়ন ডলার। সম্প্রতি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রকাশিত ‘ফ্লো অব এক্সটার্নাল রিসোর্সেস ইনটু বাংলাদেশ ২০২১-২২’ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে এ তথ্য। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বাড়তে বাড়তে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে পাইপলাইনে থাকা ঋণ। চলতি অর্থবছরও (২০২১-২২) বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) অর্থ ব্যবহার করতে না পারায় ঋণসহায়তা কমেছে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার বা ১৭ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাইপ লাইনে আটকে যাচ্ছে সরকারের উন্নয়নের চাকা। সরকারের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলো অব্যবস্থাপনার কারণেই সময়মতো এসব প্রকল্প সফলতার মুখ দেখছে না। ফলে বৈদেশিক সহযোগিতায় যেসব প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে, এসব প্রকল্পের ঋণের টাকা পাইপলাইনে আটকে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের গত পাঁচ মাসে বিদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেনে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। এ সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল প্রায় ১১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈদেশিক ঋণের বোঝা কমাতে প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি ত্বরান্বিত করতে হবে। প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করলে ঋণের টাকাও দ্রুত খরচ করা সম্ভব হবে। এতে কমবে পাইপলাইনে থাকা ঋণ। অনেকে কমিটমেন্ট চার্জ নিয়ে থাকে। সাধারণত ০ দশমিক ২৫ থেকে ০ দশমিক ৫ স্ট্যান্ডার্ড কমিটমেন্ট চার্জ। এই চার্জ সবাই নিতে থাকলে বাংলাদেশের জন্য বিপদ।
‘ফ্লো অব এক্সটার্নাল রিসোর্সেস ইনটু বাংলাদেশ ২০২১-২২’ প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু ২০২১-২২ অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ১০ দশমিক ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ।
এ সময়ে অনুদান এসেছে ৬৫ দশমিক ৫৮ কোটি ডলার বা ০ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের। বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের শীর্ষে রয়েছে বিদ্যুৎ খাত। বিদ্যুৎ খাতে ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণ এসেছে। এর পরেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে এসেছে ১৬ বিলিয়ন। সবচেয়ে কম, ১ বিলিয়ন ডলার এসেছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ঋণ নেয়া হয়েছে সরকারি সাধারণ সেবা খাতে। ঋণের পরিমাণ ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া শিক্ষা খাতে ৭৬৬, স্বাস্থ্য খাতে ৬৫৮, হাউজিং খাতে ৬৪৭ কোটি ডলার ঋণ এসেছে। ঋণ দেওয়ার শীর্ষে রয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাংক দিয়েছে প্রায় ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর পরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ২০ বিলিয়ন ডলার, জাপান ১৪ ও চীন ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে। এছাড়া রাশিয়ার নিকট থেকে ৫৭৮, জাতিসংঘ থেকে ২২৯, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১২৯, যুক্তরাজ্য থেকে ২২২, কানাডা থেকে ৮৮, জার্মানি থেকে ১৫৮, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ১২২, ভারত থেকে ১৫৪ এবং ইউনিসেফ থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে ১৫১ কোটি ডলার।
ইআরডি সূত্র জানায়, বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ৫১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের তুলনায় ৯ বিলিয়ন ডলার বেড়েছিল পাইপলাইনে থাকা বৈদেশিক ঋণ। এভাবে প্রতিবছরই বৈদেশিক ঋণের বোঝা বাড়ছে পাইপলাইনে। সংশ্লিষ্টরা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ইআরডির মাধ্যমে মোট বৈদেশিক অনুদানের প্রতিশ্রুতি এসেছে ৩৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ছাড় হয়েছে ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাকি ছয় বিলিয়ন ডলারের অনুদান পড়ে রয়েছে পাইপলাইনেই।
উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সরকার প্রতি বছর কতটি ঋণচুক্তি করছে, আর কী পরিমাণ অর্থ ছাড় হচ্ছে, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে ইআরডির একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে। এতে দেখা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে মোট ৭০৫ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়েছে। ওই বছর ছাড় হয়েছে ৩৫৬ কোটি ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছর ১ হাজার ৭৯৬ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়। সে বছর ৩৬২ কোটি ডলার ছাড় হয়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চুক্তি হওয়া ১ হাজার ৪৮৯ ডলারের মধ্যে ছাড় হয়েছে ৬৩৬ কোটি ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সই হওয়া ৯৯১ কোটি ডলার থেকে ছাড় হয় ৬২৬ কোটি ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি এসেছে সাড়ে ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ছাড় হয়েছে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ৫০ দশমিক ২১২ বিলিয়ন ডলার এসেছে প্রজেক্ট সহায়তার জন্য। এছাড়া ১৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খাদ্যখাতে ঋণ এসেছে। তবে কমোডিটি এইডে কোনো ঋণ আসেনি।
পাইপলাইনে সবচেয়ে বেশি আছে জাপানের দেওয়া ঋণ। এর পরিমাণ প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার। সাড়ে ছয় বিলিয়ন ডলার ভারত এবং চীনের আছে প্রায় চার বিলিয়ন ডলার। এছাড়া এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক বিলিয়ন, এশীয় পরিকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন, বিশ্বব্যাংকের ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন, আইডিবির পাঁচ বিলিয়ন এবং রাশিয়ার প্রতিশ্রুত আট বিলিয়ন ডলার ঋণ পাইপলাইনে পড়ে রয়েছে।
ইআরডির সূত্র বলছে, বৈদেশিক ঋণ ব্যবহারের সক্ষমতা কমে গেছে। ফলে প্রতি বছরই পাইপলাইনে বৈদেশিক ঋণ থেকে যাচ্ছে। ঋণ ব্যবহারের অদক্ষতা ও বৈদেশিক পলিসি মেনে চলাসহ নানান কারণে বিদেশী ঋণ ব্যবহার করা যাচ্ছে না সময়মতো। যেমন- প্রকল্পের নির্ধারিত চার বছর মেয়াদ শেষ হলেও যশোর, কক্সবাজার, নোয়াখালী ও পাবনার বিদ্যমান মেডিকেল কলেজের জন্য ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়ায় এসব প্রকল্প থেকে ঋণ বাতিল করেছে ভারত। এ কারণে নতুন করে সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নে শুরু হচ্ছে এ প্রকল্পের কাজ। ফলে বাড়ছে প্রকল্পের সময়-ব্যয়।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন জানান, ব্যবহার না বাড়লে নতুন প্রতিশ্রুতি বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। দাতাদেরও কান্ট্রি ওয়াইজ একটা টার্গেট থাকে কোন দেশকে কোন প্রকল্পে ঋণ দেওয়া যায়। সরকারেরও এ বিষয়ে ইন্টারেস্ট থাকে। এসব কারণেই পাইপলাইনে ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। দাতারা পাস করলে পাইপলাইনে ঢুকে যায়। দেখা যায় পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক সময় আট বছর লাগে। নতুন কমিটমেন্ট বাড়ে। অর্থ থাকার পরও ব্যবহার হয় না। যতটা চতুরতার সঙ্গে কমিটমেন্ট আদায় করি ততটা চতুরতার সঙ্গে ডিসবার্সমেন্ট করতে পারি না। প্রতি বছর পাইপলাইনে ফুলতেই থাকে ঋণ। প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়াতে হবে। বাস্তবায়ন দ্রুততার সঙ্গে করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় বেশি লাগে, এটা বন্ধ হতে হবে। অনেক সময় দেশী টাকা ব্যবহারে যতটা পারদর্শী, বিদেশী টাকা ব্যবহারে ততটাই অদক্ষতা দেখা যায়। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুত অনেক অর্থ সময়মতো পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা গেছে, বিভিন্ন প্রকল্প বা কর্মসূচিতে অর্থায়নের বিষয়ে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনা করে থাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। আলোচনায় ঠিক হয় কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় বা কী ধরনের অর্থায়ন হবে। নীতিগতভাবে সম্মত হওয়ার পর উন্নয়ন সহযোগী কর্তৃপক্ষ অর্থায়নের বিষয়টি অনুমোদন করে। এর পর তাদের সঙ্গে ঋণ বা অনুদান চুক্তি সই করে ইআরডি। এটিই মূলত অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি। আর চুক্তির পর ছাড় না হওয়া মোট অর্থকে পাইপলাইনে থাকা অর্থ বলে বিবেচনা করা হয়। চুক্তি অনুসারে উন্নয়ন সহযোগীদের অনেকেই দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়ন করে থাকে। সে জন্য পাইপলাইনে অর্থ থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে অনেক সময় প্রকল্প বাস্তবায়ন ঝুলে গেলে অর্থছাড়ও কমে যায়। আবার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও অর্থছাড় করে না উন্নয়ন সহযোগীরা। এ ছাড়া উন্নয়ন সহযোগীদের নানা শর্তের কারণেও বাস্তবায়ন পিছিয়ে যায়। এভাবে পাইপলাইনে থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়ে যায়।
ইআরডি সূত্র জানায়, গত কয়েক মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার কমেছে। নবেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়ন হার গত সাত বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। প্রতিশ্রুত অর্থ ব্যবহার করতে না পারলেও এর বিপরীতে কমিটমেন্ট ফি বা সাভিস চার্জ ঠিকই পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে। উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে পাইপলাইনে থাকা অর্থ সবচেয়ে বেশি বিশ্বব্যাংকের। চলতি অর্থবছরে সব মিলিয়ে ১ হাজার ২৩৮ কোটি ডলার ছাড় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ সহায়তা আনার দায়িত্ব অর্থ মন্ত্রণালয়ের। প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ। আর প্রকল্প ঠিকভাবে বাস্তবায়নে তাগাদা দেওয়া এবং তদারকি করার দায়িত্ব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের। সেটা আমরা করছি। অর্থছাড়ের ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগীরা মানসম্পন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলে। অপচয় রোধ করে সাশ্রয়ী প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, অধিকাংশ প্রকল্পেরই বাস্তবায়ন যথাসময়ে হচ্ছে না। এমনকি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নে ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পেও একই অবস্থা।
জানা গেছে, বারবার সংশোধন করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর নজির হরহামেশাই মেলে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পের মেয়াদ না বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তিসংগত কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে হলে সর্বোচ্চ তিনবার সংশোধন করা যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এত কিছুর পরও গত অর্থবছরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়নি- এমন ৩০০ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি যে সকল কর্মকর্তা এইসব উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন, তাদের অব্যস্থাপনা, দুর্নীতি প্রবণতা এবং কতিপয় বিরোধী শক্তির প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে এসব উন্নয়ন প্রকল্পের চাকা দ্রুত বেগবান করতে হবে। সম্প্রতি আইএমএফ থেকে যে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ সহযোগিতা বাংলাদেশ পেতে যাচ্ছে এবং এই ঋণের টাকায় যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে, সেক্ষেত্রেও সরকারকে যথেষ্ট সজাগ ভূমিকা রাখতে হবে। তা না হলে উন্নয়নের যে গতি প্রবাহমান রয়েছে। সে উন্নয়নের চাকা আটকে যাবে।
সোর্স : দৈনিক সংগ্রাম