মাদক কারবার। গাড়ির গতিরোধ করে ছিনতাই। নারীর শ্লীলতাহানি। সতীর্থকে পিটিয়ে জখম। জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়। এমন নানা অপকাণ্ডে জড়াচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী। যাদের এমন অপকর্মের কারণে দুর্নাম কুড়াতে হচ্ছে পুরো শিক্ষা পরিবারকে। যখন কোনো ঘটনা ঘটে, খবরের কাগজে শিরোনাম হয় তখন ব্যবস্থাও নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কিছুতেই থামছে না এ ধরনের ঘটনা। এসব ঘটনার কোনো কোনোটির পেছনে ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকারও অভিযোগ ওঠে।
সর্বোচ্চ মেধাবী হিসেবে বিবেচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীরা কেন জড়াচ্ছে এসব কর্মে? উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে এসে কেনইবা ছিনতাইকারী, মাদককারবারি কিংবা বখাটের তকমা লাগছে তাদের গায়ে? শিক্ষাবিদরা বলছেন, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে এসব শিক্ষার্থী এমন কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তাই শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক ‘অ, আ, ক, খ’ না শিখিয়ে নৈতিকতার শিক্ষাও দেয়া উচিত। নতুবা এসব বন্ধ করা যাবে না। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্সে শিক্ষার্থীদের মাদক সরবারহের দু’টি ঘটনায় বেশ তোলপাড় চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরও কতিপয় শিক্ষার্থী ট্রাকের গতিরোধ করে ছিনতাই করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। সাবেক শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির দায়ে বহিষ্কার হয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই দু’জন শিক্ষার্থী। এ ছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হোস্টেল থেকে গভীর রাতে এক ছাত্রীকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সময় পাশের আরেকটি রুম থেকে মাদক উদ্ধার করে পুলিশ।
গত ২৬শে জানুয়ারি পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের জন্য মাদকদ্রব্য পরিবহনের সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্সের ধাক্কায় আব্দুল কুদ্দুস (৩০) নামে এক অটোরিকশাচালক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারীও আহত হয়েছেন। এ ছাড়া গুরুতর আঘাতে তার গর্ভের সন্তান মারা গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, মওলানা ভাসানী হলের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয় ২৭শে জানুয়ারি। আর এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য আনা হয় ক্যাম্পাসে। এসব মাদকদ্রব্য বহনে ব্যবহার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্স। মাদকদ্রব্য পরিবহনকালে গভীর রাতে বিপিএটিসি এলাকায় এম্বুলেন্সটি একটি অটোরিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এ ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যান রিকশাচালক আব্দুল কুদ্দুস। এ ছাড়া রিকশায় থাকা এক মহিলা গুরুতর আহত হয়। দুর্ঘটনার সময় এম্বুলেন্সটিতে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক রিফাত চৌধুরী ও উপ-অর্থ সম্পাদক আহসান হাবিব ইমন। তারা উভয়ে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। দুর্ঘটনার সময় এম্বুলেন্সটি চালাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চালক রিপন হাওলাদার।
৪ঠা ফেব্রুয়ারি এম্বুলেন্সে করে মাদক নিয়ে যাওয়ার সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। রাত ৮টার দিকে রাজধানীর বংশাল থানার ঢাকা ব্যাংকের সামনে থেকে ওই দুই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। আটক হওয়া শিক্ষার্থীরা হলো- ৪৩ ব্যাচের রিপন সাহা (২৮) ও ৪৪ ব্যাচের জুয়েল আহমেদ (২৭)। পুলিশ জানায়, আটকরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে চালক আব্দুল্লাহ দুলালকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে মদ জব্দ করা হয়েছে। জানা গেছে, জাবি’র ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী উৎসব (র্যাগ ডে) উদ্যাপন উপলক্ষে বংশাল এলাকা থেকে মদ কেনার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী রোগী আনার কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের এম্বুলেন্স ব্যবহার করে মাদক কেনা শেষে ক্যাম্পাসে ফিরছিল তারা। পথে ঢাকা ব্যাংকের কাছে পৌঁছানোর পর পুলিশ মাদক বহনকারী এম্বুলেন্সটি আটক করে।
৮ই ফেব্রুয়ারি রাজধানীর খিলগাঁও থেকে বাসে করে গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে যাচ্ছিলেন অলিউল্ল্যাহ (৩২) নামের এক যুবক। তবে গন্তব্যে না পৌঁছে জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের একটি কক্ষে আবিষ্কার করেন। ওখানে থাকা ৪ জন তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত হলের ‘এ’ ব্লকের ২১৪ নম্বর কক্ষে নিয়ে নির্যাতন করেন এবং ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ৪ জনের একজনকে শনাক্ত করতে পেরেছেন ভুক্তভোগী। অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীর নাম অসিত পাল। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫তম ব্যাচের (২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। ওয়ালিউল্লাহ আরও বলেন, টাকা দিতে না পারায় তারা আমাকে চাকু দেখায় এবং লোহার পাইপ দিয়ে মারধর করে। পরে কাছে থাকা নগদ ৪০ হাজার টাকা ওরা নিয়ে নেয়। ভয়ভীতি দেখালে পরিবার থেকে আরও ৫ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে তাদের দেই। টাকা নিয়ে তারা আমাকে হলগেটে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় মধ্যরাতে হল প্রশাসনের উপস্থিতিতে ২১৪ নম্বর কক্ষে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় একটি লোহার পাইপ, চাকু, বিভিন্ন ইনজেকশন ও মাদকদ্রব্য সেবনের আলামত উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া বিকাশে টাকা আদায়ের সঙ্গে অভিযুক্ত অসিত পালের সংশ্লিষ্টতার সত্যতা মিলেছে বলে জানায় হল প্রশাসন।
গত ২রা ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা অনুষদের ছাত্র হোস্টেলের একটি কক্ষ থেকে এক ছাত্রীকে আটক করা হয়েছে। এ সময় পাশের আরেকটি কক্ষ থেকে কয়েক গ্রাম গাঁজাও জব্দ করা হয়। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ নিয়ে অভিযান চালায় প্রক্টরিয়াল বডি। এ সময় শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলের ১০৫ নম্বর কক্ষ থেকে ইনস্টিটিউটের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে আটক করা হয়। আটকের পরে ওই ছাত্রী আর এভাবে অবস্থান করবেন না মর্মে মুচলেকা দিলে ছেড়ে দেয়া হয়। আর ১০৪ নম্বর কক্ষ থেকে কয়েক গ্রাম গাঁজাও জব্দ করা হয়।
গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ট্রাক থামিয়ে ছিনতাইয়ের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। রাত ৩টার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মসজিদের সামনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। পরে অভিযুক্ত ৩ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ছিনতাইয়ের ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে ভুক্তভোগীকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এজাহার দায়ের করলে পরে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীরা হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ফজলে নাবিদ সাকিল, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মো. রাহাত রহমান এবং সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাদিক আহাম্মদ। ৩ জনই ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ফজলে নাবিদ ও সাদিক আহমেদ ছাত্রলীগ কর্মী। অপর শিক্ষার্থী রাহাত রহমান চকবাজারের একটি ভাড়া বাসায় থাকতো। তার রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি।
২৬শে জানুয়ারি রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লেক-সংলগ্ন কংক্রিটের বেঞ্চে বসা যুগলদের একে একে জেরা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী। যাদের বেশির ভাগই বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। এ সময় তারা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মুঠোফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেন। একইদিন রমনা কালীমন্দির এলাকায়ও বহিরাগত কয়েকজন তরুণকে জিম্মি করা হয়। ছিনিয়ে নেয়া হয় তাদের মুঠোফোন ও মানিব্যাগ। একইদিন রাত ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয়ে একদল তরুণ বহিরাগত ব্যক্তিদের মারধর করছে। ২৭শে জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনের পেছনের সড়কে দুই ব্যক্তিকে মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারী চক্র।
৪ঠা ফেব্রুয়ারি রাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় পরিবারের সদস্যসহ মারধর ও ছিনতাইয়ের শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক কর্মকর্তা। তাদের কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা ও ব্যাংকের এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয়া হয়। ছিনতাইকারীদের দু’জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, একজন সূর্য সেন হল শাখা ছাত্রলীগের সদস্য।
এদিকে ৬ই ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলাপরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে। বহিষ্কৃতদের ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না’ মর্মে পত্রপ্রাপ্তির ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতেও বলা হয়েছে। জানা গেছে, ১৫ই জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোটরসাইকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরছিলেন ঢাবি’র এক সাবেক শিক্ষার্থী ও তার স্বামী। শিখা চিরন্তনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রাহুল রায়, তুষারসহ কয়েকজন তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় রাহুল রায় ওই নারীকে শ্লীলতাহানি করেন। তার স্বামীকে মারধর করে ওই নারীর গলায় থাকা এক লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের সোনার চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। স্বামীকে মারধর করার সময় ওই নারী বাধা দিতে গেলে পাশে থাকা ডিউটিরত আনসারদের প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে তাকে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ১৭ই জানুয়ারি ভুক্তভোগী নারী রাহুল রায়, তানজীর আরাফাত তুষার এবং অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় ১৯শে জানুয়ারি তুষারকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। পরদিন আদালতে তার জামিন হয়।
জাহাঙ্গীরগনর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ফিরোজ-উল-হাসান মানবজমিনকে বলেন, এ ঘটনাগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। শিক্ষার্থীরা অনুমতি নিয়েই এম্বুলেন্স নিয়েছে। কিন্তু তারা সেটির মিসইউজ করেছে। তারা রোগী দেখিয়েই এম্বুলেন্স বরাদ্দ নিয়েছে। তাই সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি ধরতে পারেনি। এতদিন এম্বুলেন্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে নীতিমালার বাস্তবায়ন হচ্ছিল না। আমরা এখন সেদিকে জোর দিয়েছি। এখন থেকে এম্বুলেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট হলের প্রভোস্টের অনুমতি লাগবে। আর যারা এ দু’টি ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আমরা সামনের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেবো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী মানবজমিনকে বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে আমরা সর্বোচ্চ বহিষ্কার করতে পারি। এর বাইরেও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিচ্ছে। ক্যাম্পাসে বহিরাগতাদের অবাধ আনাগোনা থাকায় অনেক সময় অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি সম্ভব হয় না। তবে এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রক্টরিয়াল টিমের নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় এসেই কেন নৈতিক অবক্ষয়মূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে সেটি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। পারিবারিক মূল্যবোধের শিক্ষা যথাযথভাবে পেয়ে আসলে এমনটা হওয়ার কথা ছিল না।
শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক মানবজমিনকে বলেন, নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণে এসব ঘটনা ঘটে থাকে। নতুবা এম্বুলেন্সে করে কীভাবে মাদক সরবারহ করা হয়। আর এর সঙ্গে শুধু শিক্ষার্থীরা জড়িত বলে আমার মনে হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্সে মাদক সরবারহ করলে এর সঙ্গে অন্যরাও জড়িত থাকে বলে মনে হয়। এককভাবে এটি সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমরা আসলে শিক্ষা শুধু পাঠদান করছি। কিন্তু নৈতিক শিক্ষা দিচ্ছি না। শিক্ষক হিসেবে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি না। সামাজিক অবক্ষয়ের কারণেই শিক্ষার্থীরাও এমন কর্মে জড়াচ্ছে। তাই প্রাথমিক থেকেই শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষার প্রতি জোর দেয়া উচিত। সততা দেশপ্রেম মূল্যবোধ শেখানো উচিত। পরিবারকেও এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করতে হবে। এসব ঘটনায় বহিষ্কার করছে এটাও একটা ভালো দিক। তবে শুধু বহিষ্কার করলেই হবে না। যে শিক্ষার্থীরা এর সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ হবে তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা উচিত।
সোর্স : মানবজমিন