গত কয়েক দিন আগেও বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হতো ১৯০-২০০ টাকায়। কিন্তু সপ্তাহের শেষ দিনে এসে ২০-৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির এমন দাম বৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তেরও নাগালের বাইরে চলে গেছে মাংসের বাজার।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজার ও মহাখালী কাঁচাবাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে ব্রয়লার মুরগির দামের এই চিত্র দেখা গেছে। গত মাসের বাজার দরের পরিসংখ্যান দেখলে ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধি নিয়ে আরও ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়। বাজার দর অনুযায়ী, গত মাসে ব্রয়লার মুরগি ১৫০-১৬০ টাকায় কেজিপ্রতি বিক্রি হতো। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে এই দাম এখন ২২০ টাকা।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি ব্যবসায়ী ও ফার্মের মালিকরা খাবারের দাম ও সরবরাহের খরচ বৃদ্ধির কথা বলে মুরগির দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন। ফলে বেশি দামে কিনে খুচরা বাজারে বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বৃদ্ধি নিয়ে পশ্চিম রাজাবাজারের ব্যবসায়ী মো.জোবায়ের বলেন, গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার ১৯০-২০০ টাকা কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেছি। কিন্তু গতকাল রাতে যেসব মুরগি পাইকারি বাজার থেকে কিনে নিয়ে এসেছি তা আজ সকালে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বাড়ার ফলে মুরগির বিক্রি অনেক কমে গেছে। এতে আমাদের লোকসানই হচ্ছে।
এ বিষয়ে মহাখালী কাঁচাবাজারের মুরগি বিক্রেতা ইদ্রিস মিয়া বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ৫-১০ টাকা করে মুরগির দাম বেড়ে যাচ্ছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন- খাবারের দাম বাড়ার কারণে নাকি ফার্মের মালিকরা দাম বাড়িয়েছে। অন্যদিকে সরবরাহের খরচও নাকি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে এই দাম বৃদ্ধি। নতুন করে ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধি নিয়ে অনেকটা ক্ষুব্ধ ও হতাশ নিম্ন আয়ের মানুষসহ মধ্যবিত্তরা। তারা বলছেন, দামের কারণে গরু কিংবা খাসির মাংস অনেক আগে থেকেই নাগালের বাইরে ছিলো। এখন ব্রয়লার মুরগির দামও নাগালের বাইরে। এ অবস্থায় সপ্তাহে অন্তত একদিনও মাংস খাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছুটির দিনে বাজার করতে আসা গার্মেন্টস কর্মী সাবিয়া খাতুন বলেন, দামের কারণে গরু ও খাসির মাংস তো মাসে একবারও খাওয়া সম্ভব হয় না। একমাত্র ভরসা ছিল ব্রয়লার মুরগিটা। কিন্তু তার দাম যেভাবে বেড়েছে ছেলেমেয়েদের আর মাংসও খাওয়াতে পারব না। এদিকে বাজার দর অনুযায়ী, সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা। সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, ২৮০-৩০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছিল সোনালি মুরগি। এছাড়া দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা।
গরুর ও খাসির মাংস আগের মতোই উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায় ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১১০০ টাকায়। অন্যদিকে মাছের বাজারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি কাতল মাছ ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়, রুই মাছ আকার অনুযায়ী ৩০০-৩৫০ টাকা, পাবদা মাছ ৪৫০ টাকা, মলা মাছ আকার অনুযায়ী ৪০০-৫০০ টাকা, শোল মাছ আকার অনুযায়ী ৬০০-৮০০ টাকা, পাঙ্গাশ মাছ ১৭০-১৮০ টাকা, কই মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, টেংরা মাছ ৫০০-৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, রুই মাছ চিংড়ি মাছ ৬০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সোর্স : ইনকিলাব