২০২২ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। এতে উত্তীর্ণ হয়েছে ১০ লাখ ১১ হাজার ৯৮৭ জন। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হতে হবে ভর্তিযুদ্ধে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে ভর্তি লড়াইয়ে নামবে তারা। সব শিক্ষার্থীরই স্বপ্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে ভর্তির। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন রয়েছে ৫৭ হাজার ৯৯টি। অন্যদিকে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেলে আসন রয়েছে ১০ হাজার ৮৩৯টি। এর মধ্যে ৩৭টি সরকারি মেডিকেলে আসন রয়েছে ৪ হাজার ৩৫০টি। সব মিলিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে আসন রয়েছে ৬৭ হাজার ৯৩৮।
বিজ্ঞাপন
সে হিসাবে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত অনেক শিক্ষার্থীই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাবে না। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৫০টি। এর মধ্যে ৪৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ন্নাতক পর্যায়ে ভর্তির জন্য আসন রয়েছে কেবল ৫৭ হাজার ৯৯টি। অন্য ৩টি হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়। আর সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে ৩৭টি।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে ৭২টি। সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে আসন রয়েছে কেবল ৪ হাজার ৩৫০টি। আর বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন রয়েছে ৬ হাজার ৪৮৯টি। শিক্ষাবিদরা বলছেন, সবাই উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেলেও পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে না এটা ঠিক। তবে যেখানেই ভর্তি হোক না কেন অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে নিজেকে সেরা প্রমাণ করার সুযোগ রয়েছে। নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কর্মক্ষেত্রে দক্ষতাই জরুরি। ইউজিসি’র তথ্য অনুযায়ী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে (সম্মান/কারিগরি) ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৫২৭টি। আর স্নাতক (পাস) পর্যায়ে আসন রয়েছে ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৪৮৬টি। অন্যদিকে ১০৯টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৬৭৭টি। আর স্নাতক (পাস) শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে ১ হাজার ৬৮২টি। সব মিলিয়ে দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য আসন রয়েছে ১৩ লাখ ৯০ হাজার ২৭২টি। আর এইচএসসিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ১১ হাজার ৯৮৭।
অর্থাৎ ৩ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৫টি আসন ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থীর থেকে বেশি রয়েছে। এ ছাড়াও ইউজিসি’র সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সালে ৫৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন ফাঁকা ছিল ৩২০টি। এ ছাড়া বাকি ৩টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ন্নাতক সম্মান পর্যায়ে ফাঁকা আসনের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ২ হাজার ৫০২টি। আর পাস কোর্সে ফাঁকা ছিল ১ লাখ ৯৬ হাজার ৭৭৩টি। অন্যদিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সম্মান পর্যায়ে আসন ফাঁকা ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৫১৩টি। এখানে ভর্তি হয়েছে কেবল ৬৭ হাজার ১৬৪ জন। আর পাস কোর্সে ১ হাজার ৬৮২টি আসনের বিপরীতে ভর্তি হয়েছিল কেবল ৩৭৭ জন। এদিকে গত বুধবার ফলাফল ঘোষণার সময় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, অভিভাবকদের বলবো, আপনারা সন্তানকে অসুস্থ প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দেবেন না। স্বার্থপর হিসেবে গড়ে তুলবেন না। দেশের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত হওয়ার শিক্ষা যদি আপনার সন্তান না পায় তাহলে শিক্ষা অর্থবহ হবে না। শিক্ষার উদ্দেশ্যই বৃথা যাবে। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যে যেখানেই ভর্তির সুযোগ পাও না কেন নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে দক্ষতাই মুখ্য।
সোর্স : মানবজমিন