জামায়াতে ইসলামী এদেশে ইনসাফভিত্তিক সমাজ কায়েমের মধ্য দিয়ে একটি ক্ষুধা-দারিদ্র ও বৈষম্যমুক্ত ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মোহাম্মদপুর পশ্চিম থানা আয়োজিত এক সদস্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর ডা. শফিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাসুদুজ্জামানের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও জোন পরিচালক মোঃ জিয়াউল হাসান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, থানা সহ. সেক্রেটারি এবাদত হোসেন, কর্মপরিষদ সদস্য রবিউল ইসলাম রুবেল, এ্যাড তাইয়্যেবুর রহমান, আবুল কালাম আজাদ ও আলী আহমেদ মজুমদারসহ ওয়ার্ড সভাপতি – সেক্রেটারিগণ প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহ তা’য়ালা জান্নাতের বিনিময়ে মুমিনের জানমাল ক্রয় করে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে মহান আল্লাহর সাথে আমরা চুক্তিবদ্ধ। আর এই চুক্তির শর্তাবলী যথাযথভাবে পালনের মধ্যেই রয়েছে মানুষের ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি। তাই জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ তা’য়ালার বিধান ও রাসূল (সা.)-এর আদর্শ যথাযথভাবে অনুসরণ করার কোন বিকল্প নেই। মূলত, সমাজ-রাষ্ট্রে এ পরিবেশ সৃষ্টি করাই জামায়াতের রাজনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তিনি ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার সংগ্রামে সর্বশক্তি নিয়োগের জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানান। তিনি রুকনদের উদ্দেশে বলেন, রুকনিয়াত হচ্ছে সংগঠনের সর্বোচ্চ স্তর। তাই দ্বীনকে বিজয়ী করতে রুকনদেরকেই অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করতে হবে। ধৈর্য্য ও সাহসিকতার সাথে ময়দানে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। একই সাথে সরকারের জুলুম-নির্যাতন থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ ত্যাগ ও কুরবানীর নজরানা পেশ করতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সকলকে নতুন করে শপথ গ্রহণের আহবান জানান।
মহানগরী আমীর বলেন, সরকার দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা বারবার পাতানো ও ষড়ন্ত্রের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে জনগণকে অপশাসন-দুঃশাসন ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। সরকার আগামীতে একই কায়দায় এবং ইভিএম যন্ত্রের মাধ্যমে ডিজিটাল কারচুপী করে কথিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু সচেতন জনতা সরকারের সে ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হতে দেবে না। তিনি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে সরকারকে জনমত যাচাইয়ের আহবান জানান। অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনগণই গণদাবি আদায় করবে-ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী সবকিছুই দিয়ে আসলেও দেশটির কাছে কিছুই আদায় করতে পারেননি। ডজন-ডজন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হলেও দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের বাঁচা-মরার প্রশ্ন ‘তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখে কোন কথা নেই বরং তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য অপ্রয়োজনীয় কুশিয়ারা নদীর পানি বন্টনের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছেন। মূলত, আগামী নির্বাচনে প্রতিবেশি দেশের সমর্থন লাভের জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশটিকে সবকিছু উজার করে দিলেও এই সফরে আমাদের কোনই প্রাপ্তি নেই। আসলে, এই সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নির্ভর নয় বলেই জনগণের জন্য তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। তিনি জুলুমবাজ সরকারের পতনের লক্ষ্যে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
উক্ত থানাতেই অপর একটি অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান ও অসহায় গৃহহীন মানুষদের জন্য ঘড় নির্মাণ করে চাবি হস্তান্তর করেন মহানগরী আমীর জনাব মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।